মাথায় বা স্পাইনাল কর্ডে আঘাত, কী করবেন?

পরামর্শে আর এন টেগোর হাসপাতালের নিউরোসার্জেন ডাঃ অমিতাভ চন্দ

-  লিখেছেন মনীষা মুখোপাধ্যায়

• রাস্তাঘাটে বাসে-ট্রেনে হঠাৎ মাথায় চোট। সঙ্গে সঙ্গে ফুলে গেল। তৎক্ষণাৎ কী করণীয়? যানবাহনের ঝাঁকুনিতে অনেক সময় মাথায় আঘাত লাগে। আঘাতের পর মাথা ফুলেছে মানেই মাথার হাড় ও চামড়ার নীচের মধ্যবর্তী অংশে (সাবগেলিয়াল স্পেসে) রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাই জায়গাটা ফুলে উঠেছে। তবে ফুলে গেলে তেমন ভয়ের কিছু নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ফোলাভাব কমবে। আঘাত পাওয়ার পর দ্রুত জায়গাটিতে আইস প্যাক বা বরফ সেঁক দিতে পারলে ফোলা অংশটি দ্রুত কমবে। এই চোট যদি কপালের দিকে লাগে তাহলে কপালের চামড়ার নীচে জমে থাকা রক্ত নেমে এসে চোখের চারপাশে জমা হয়। এতেও ভয়ের কিছু নেই। এই ধরনের চোট আঘাতের জন্য ওষুধের প্রয়োজন পড়ে না। বরফ সেঁকেই ধীরে ধীরে সেরে ওঠেন রোগী।

• কিন্তু যদি মাথা ফেটে রক্ত পড়ে? রাস্তাঘাটের দুর্ঘটনা তো লেগেই আছে। শিশু-কিশোরেরা স্কুলে খেলতে গিয়েও বিপদ বাঁধিয়ে বসে...। •• এসব ক্ষেত্রে শুশ্রূষা যিনি করছেন, তাঁকে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। যদি রোগীর জ্ঞান থাকে, ভয়ের কিছু নেই। এমনিতে মাথার ত্বকের নীচে রক্ত পরিবহণ খুব বেশি পরিমাণে হয়। তাই মাথা ফাটলে গলগল করে রক্ত বের হয়। এতে অনেকে ভয় পেয়ে যান। হতবুদ্ধি না হয়ে প্রথমে পরিষ্কার সুতির কাপড় দিয়ে জায়গাটা মুছে দিন। এবার অন্য একটি সাফ সুতির কাপড় দিয়ে জায়গাটা ভালো করে বেঁধে দিন। এই অবস্থায় রোগীকে নিয়ে যান নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। মাথার ত্বক ফেটে গেলে সেলাই করাই দস্তুর। এতে মাথার রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়। তারপর চিকিৎসক প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেবেন। অনেকের মধ্যে ধারণা রয়েছে, মাথায় আঘাত পাওয়ার পর রক্ত বেরিয়ে গেল মানেই বোধহয় ইন্টারনাল হেমারেজ বা ভিতরে রক্তক্ষরণের শঙ্কা আর রইল না। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ধারণা। মাথার বাইরে ও ভিতরে রক্তক্ষরণের উৎস ভিন্ন। তাই আঘাতের গভীরতা ও রোগীর অবস্থা বুঝে চিকিৎসক স্ক্যান ও এমআরআই-এর পরামর্শ দেবেন।