এ ভাবেই খুশি থাকা যায়!

বাহ্যিক প্রাচুর্য এড়িয়ে আদৌ কি খুশি থাকা যায়? হ্যাঁ, সেটা সম্ভব। কিন্তু কী ভাবে তা হবে? সর্বাঙ্গীণ ভাবে ভিতর থেকে খুশি থাকার উপায় বাতলে দিলেন কগনিটিভ বিহেভিয়ার অ্যান্ড হ্যাপিনেস কোচ মধু পণ্ডিত। শুনলেন সংবেত্তা চক্রবর্তী।

আ মরা, যারা মোটামুটি স্কুল-জীবন থেকেই ইঁদুর-দৌড়ে শামিল হতে শিখে গিয়েছি, তাদের মাথার ভিতর খুব স্পষ্ট কিছু অঙ্ক ছকা থাকে— ভাল করে পড়াশোনা করলে ভাল রোজগার, ভাল রোজগার হলে জীবনে প্রাচুর্য এবং প্রাচুর্য মানেই সুখ। শান্তি। খুশি। মনে আছে, ছোটবেলায় অনেক সময় বড়রা বলতেন, 'এখন মন দিয়ে পড়াশোনা করে নাও, আনন্দ করার বয়স তো পড়েই রয়েছে' ইত্যাদি। এই ভাবনার পিছনেও ওই অঙ্কই কাজ করত, যে বাহ্যিক স্বাচ্ছন্দ্য না থাকলে জীবনে খুশি থাকে না। যা-ই হোক, অনেকে সেই নিয়ম মেনে জীবনে সাফল্য পেয়েছেন, প্রাচুর্য ও স্বাচ্ছন্দ্য পেয়েছেন— কিন্তু খুশি থাকতে পেরেছেন কতটা? সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে জীবনে বাহ্যিক আড়ম্বর তো এসেছে, কিন্তু তারই সঙ্গে এসেছে স্ট্রেস, টেনশন, অবসাদ, কাছের মানুষদের সঙ্গে দূরত্ব, এমনকি সারাদিনে নিজের জন্য ন্যূনতম সময়টুকুরও আকাল! এর নাম খুশি? এবার প্রশ্ন করবেন তো, তা হলে খুশি থাকা যায় কী করে? সেটাও কোনও রকেট সায়েন্স নয়। সুকুমার রায়ের ‘রাজার অসুখ' গল্পের ফকিরকে মনে আছে? যে গাছের পাতা, ঘাস, রোদ, বৃষ্টি, মানুষজনের কথাবার্তা— এই সব দেখে আনন্দে মশগুল থাকত? গায়ে দেওয়ার জামা বা দু'বেলা খাবারেরও তোয়াক্কা করত না? আজ যে আমরা মিনিম্যালিজম, মাইন্ডফুল লিভিং বা কনশাস লিভিং নিয়ে কথা বলি— ভেবে দেখুন তো, এই গল্প আমাদের ছোটবেলাতেই সেই পাঠ পড়িয়ে দিয়েছিল কি না? তা বলে আপনাকে বলছি না যে খাওয়াদাওয়া বা পোশাকআশাক নিয়েও ভাবতে পারবেন না! মিনিম্যালিজমের মন্ত্র আসলে হল, জীবনে যেটুকু প্রয়োজন, সেটুকুতেই সন্তুষ্ট থাকতে শেখা। আর মাইন্ডফুল লিভিং, কনশাস লিভিং আপনাকে শেখায় শরীর, মন এবং আত্মার যোগসূত্রকে খুঁজে পেতে। একটু বিশদে বলার চেষ্টা করা যাক।