জল-পাহাড়-জঙ্গলে...

মায়াবিনী লেকের শান্ত পরিবেশে, সাজেক পাহাড়ের চারদিক ঘেরা মেঘ, কাপতাই হ্রদের প্রায় দিগন্ত ছোঁয়া জলরাশির ব্যপ্তি... চট্টগ্রামের পাহাড়-অরণ্য-জলের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ইন্দিরা দাস-এর কলমে।

কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ঢাকা এয়ারপোর্ট পৌঁছতে মোটে ঘণ্টাখানেক। খেয়াল রাখতে হয় যে, বাংলাদেশের সময় ভারতের চেয়ে তিরিশ মিনিট এগিয়ে। বিমানবন্দরে প্রতিটি জায়গায় বাংলা লেখা। এমনকি গেট বা পিলারের সামনে ক্রমানুবর্তী নম্বরও ‘১ ক’, ‘২ খ’ হিসেবে লেখা । বন্ধুর বাড়ি পৌঁছে, অসাধারণ লাঞ্চ হল। রাতের ডিলাক্স বাসে আমরা চারজন বেরিয়ে পড়লাম। ভোর ছ'টা নাগাদ নামলাম খাগড়াছড়িতে। পর্যটন মোটেলে পৌঁছে ঘণ্টাখানেকের বিশ্রাম, প্রাতরাশ সেরে, বেড়াতে বার হলাম। চেঙ্গি স্কোয়ার থেকে আমাদের গাড়ি ভাইবোনছড়া বাজারে পৌঁছল মিনিট পনেরোয়। আরও কিছু ক্ষণ পরে নীলচে সবুজ মায়াবিনী লেক দেখা দিল গাছপালার আড়াল থেকে। প্রায় ১৫ একর ক্ষেত্রের হ্রদটির মাঝামাঝি চমৎকার দ্বীপ। ঝোলানো নড়বড়ে সেতু বেয়ে সেখানে পৌঁছে, খেলাম আদা-লেবু দেওয়া দারুণ লাল চা। ছোট ছোট রংবেরঙের ডিঙি নৌকা ঘাটে বাঁধা। ডিসেম্বরের শুরুতে হালকা ঠান্ডা। সবুজ গাছগাছালির মধ্যে বসে শান্তি মেলে।

ফেরার পথে এক মনাস্ট্রিতে দেখলাম বিশাল বুদ্ধমূর্তি আকাশে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এর পর পৌঁছলাম হর্টিকালচার হেরিটেজ পার্ক। লম্বা ঝুলন্ত সেতু পার হতে ভয় আর রোমাঞ্চ যেমন, তেমনই মজা! স্থানীয় পোশাক, টুপি, বিছানার ও গায়ের চাদর, ঘর সাজানোর টুকিটাকি জিনিস বিক্রি করছে স্থানীয়রা। রেস্তরাঁয় অর্ডার করা হল ভুনা হাঁসের মাংস, ঝুরি শুঁটকি, কলাপাতায় ভাপানো ডিমের ভর্তা আর ডাল। কিছু ছবি তুলে রওনা হলাম আলুটিলা গুহা অভিমুখে। ‘মাতাই হাকর’ বা আলুটিলা কেভ খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা উপজেলার এক রহস্যের সম্ভার। ১০০০ মিটার উচ্চতার আলুটিলা পাহাড়ের অন্তবর্তী এই গুহা অভিমুখে পৌঁছতে অনেক সিঁড়ি ভাঙতে হয়। গুহার ভিতর নিশ্ছিদ্র অন্ধকার। অনেকেই মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে হাঁটছিলেন। পায়ের নীচে ছলছল করে ঠান্ডা জল। খুব সাবধানে এবড়োখেবড়ো পাথরে পা ফেলে, ধীরে ধীরে পার হলাম গুহা পথ। কিছুটা সিঁড়ি ভেঙে আবার পাহাড়ের গায়ে সূর্যের আলোর মাঝে উঠে আসা হল। রাত পেরিয়ে সকালে চললাম সাজেক অভিমুখে। জায়গাটি সংরক্ষিত এলাকা। মিলিটারি কনভয়ের পিছন পিছন পথ চলা । রাস্তায় বাঘাইহাটের আর্মি চেক-পোস্টে গাড়ি ও ড্রাইভারের