কেসটা জটিল মাইরি

এবার আর কাউকে ইশারা করছে না। দিব্বি হেঁটে-চলে বেড়াচ্ছে। ওখান থেকে তাঁকে দেখা যাচ্ছে না বলেই কি ও ইশারা করছে না?

- চণ্ডী ভট্টাচার্য

И ওবাড়ির সেজো বৌটাকে তুই দেখিসনি চাঙ্কি, সে যা ‘ইয়ে’ না! কী যে তার লুক!” একজন সুন্দরী মহিলার প্রতি মুগ্ধ এক ব্যক্তির সোজাসাপটাই বক্তব্য। আর এই বক্তব্য নিয়ে গৌরাঙ্গবাবু ক'দিন ধরে স্মৃতি ঘাঁটছেন ঠিকই, তা বলে বক্তব্যটা যে তাঁর নিজের বা তাঁরই ভাবনা প্রসূত, তেমনটা মোটেও নয়। শুধু এই বক্তব্যটাই বা কেন, ও সব ‘ইয়ে ইয়ে' মার্কা কথাবার্তা গৌরাঙ্গ মুখোটির মুখ দিয়ে এই বয়সে আর বেরোবেই না কোনও দিন! হ্যাঁ, এটা ঠিক যে, বনলতার সঙ্গে বিয়ের প্রথম দিকে শোয়ার ঘরে সেই মোক্ষম মুহূর্তে বনলতাকে আবেগের ঊর্ধ্ব গগনে তুলে ধরতে, ওই পর্যায়ের দু'-একটা কথাবার্তা মুখ থেকে কখনও বার হলেও হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু এখন কি আর সম্ভব? এমনিতেই তাঁর আর বনলতার বয়স হয়েছে। তার উপর যে কারণেই হোক, তাঁকে বনলতার এখন আর পছন্দ হয় না। তাই এখন কাছে এলেও, তাঁকে দূর দূর করে দূরে তাড়িয়ে দেয়। সেই দুঃখে একবারও আফসোস করে ফেললে উল্টে কী মেজাজ, কী মেজাজ! অতএব অমন ভাষা-টাসা... । তা ছাড়া এখন ছাপোষা এক বয়স্ক ভদ্রলোকই তো তিনি! বেঙ্গালুরুতে এমবিএ পড়তে যাওয়া এক মেয়ের বাপ। তাই মুখটাকে এখন একটু সামলে রাখতে হয়ই। আসলে ও সব কথা বলেছে এ পাড়ার বদমাশ ছেলে-ছোকরাদের একজন। এবং নিশ্চয়ই এখনও তারা নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতায় বলে চলেছে ওটাই ...

গল্প কথা নয়। ওরা সত্যিই যে বলছে, তিনি তো তা নিজের কানেই শুনেছেন। তবে ওই চাক্কি ছেলেটা যে কে, আর চাঙ্কিকে বলা কথাটার বক্তা-ই বা কে, কোথায়ই বা সে থাকে, তা তিনি বুঝতে পারেননি।