এক দেবপ্রতিম চিকিৎসক

গৌতম বুদ্ধের পর তিনিই একমাত্র মানুষ এদেশে যিনি ধর্মকে নয়, মানুষকেই বড় করে তুলতে চেয়েছিলেন। ধর্মের গোঁড়ামিকে ধুইয়ে দিয়েছিলেন প্রেমের জলস্রোতে। জাতিভেদ ও অস্পৃশ্যতা না মেনে সকল মানুষকে বুকে টেনে নিয়েছিলেন।
তাঁর বীরসিংহ গ্রামকে তিনি পরম তীর্থস্থান মনে করতেন। সেখানে গ্রামবাসী ও আত্মীয়দের কাছ থেকে হেনস্থায় তিনি মর্মাহত হয়েছিলেন এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আর বীরসিংহ গ্রামে যাবেন না। মনের জ্বালা জুড়াতে তিনি শেষ জীবনটা কাটালেন কার্মাটাঁড়ে সাঁওতালদের সান্নিধ্যে। বললেন— ‘আমার শিক্ষিত বন্ধুদের থেকে অশিক্ষিত সাঁওতালরা অনেক ভালো, কারণ তারা প্রতারণা জানে না।' সাঁওতাল অধ্যুষিত দরিদ্র মানুষের গ্রাম কার্মাটাঁড় বর্তমানে ঝাড়খণ্ড রাজ্যে অবস্থিত। কার্মাটাঁড়ে দুশো কাঠা জায়গা ও একটি বাংলো পেয়েছিলেন। তিনি বাংলোটির নাম দিয়েছিলেন— ‘নন্দনকানন’। যেখানে তিনি ১৮৭৩ সাল থেকে বসবাস করা শুরু করেন।
সহজ, সরল, সৎ, অকপট, অনাড়ম্বর জীবনযাপনে অভ্যস্ত। স্বচ্ছ, কর্মঠ সাঁওতাল সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্যাসাগর আকৃষ্ট হয়েছিলেন এবং তাদের ভালোবেসেছিলেন। পরবর্তীকালে এই সহায় সম্বলহীন মানুষগুলির আত্মার আত্মীয় হয়ে যান। এদের চিকিৎসা পরিষেবার দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেন। এদের কাছে বিদ্যাসাগর সাক্ষাৎ ‘মরাং গুডু' মানে প্রধান ঈশ্বর।
কার্মাটাঁড়ে বিদ্যাসাগরের বাংলোতে কয়েকদিন কাটিয়েছিলেন তাঁর ভ্রাতৃসম হরপ্রসাদ শাস্ত্রী। তাঁর স্মৃতিচারণা থেকে জানা যায়— পরদিন সকালে উঠে তিনি দেখলেন, নানা বয়সের সাঁওতাল নারী-পুরুষদের ভিড় জমে গিয়েছে বাংলোর উঠোনে। প্রত্যেকের হাতে কিছু ভুট্টা, তারা বিদ্যাসাগরকে বলছে, ভুট্টা কটা নিয়ে আমাকে পাঁচগণ্ডা পয়সা দে, আমার ছেলের অসুখ। কেউ বলছে, এই ভুট্টা কটা নিয়ে আমাকে আটগণ্ডা পয়সা দে, খুব দরকার। এভাবে ভুট্টা কেনার পর্ব কিছুসময় ধরে চলল। ঘরের তাক রাশি রাশি ভুট্টায় ভরে গেল। এরপর হরপ্রসাদ একটু ঘুরতে বেরিয়েছিলেন।
This story is from the March 15, 2025 edition of Saptahik Bartaman.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the March 15, 2025 edition of Saptahik Bartaman.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In

জীবন ঘিরে যত জিজ্ঞাসা
মানুষের জীবন নানা রঙের গল্পে ভরা, যেখানে প্রতিটি সম্পর্ক, চাওয়া-পাওয়া ও অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। আইভি চট্টোপাধ্যায়ের ‘বারো ২ আরো’ গল্প সংকলন জীবনের সেই সূক্ষ্ম বাস্তবতাকে গভীর সংবেদনশীলতায় তুলে ধরে।

প্রেতসাধনা কী? এই সাধনায় গৃহস্থের কী মঙ্গল হয় ?
প্রেতসাধকেরা বলেন, প্রেতাত্মারাই হল ভূত। এদের ভেতরও ভালো-মন্দ— দু'টি শ্রেণি আছে। ভালো প্রেত মানুষকে বিপর্যয় থেকে বাঁচিয়ে মঙ্গল করে। আর দুষ্ট প্রেতাত্মারা অনিষ্টের কারণ। শ্মশান কিংবা শিবস্থল ছাড়া প্রেতসাধনা হয় না। ক্ষুধার্ত প্রেত আমাদের চারপাশে ঘুরে বেড়ায়। সাধকের প্রাণ থেকে মন একটু আলগা হলেই তারা সব মনকে প্রাণের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি করার খেলায় মাতে। প্রাণ হল মানুষের নাভিচক্রে থাকা তেজ। এই তেজকেই বলবান করেন প্রেতসাধুরা। প্রেতবাহনা ও মোহিনীপ্রেতের উপাসনা কী? প্রেতপীঠ কোথায়? গৃহস্থের সাংসারিক মঙ্গলের জন্য প্রেতসাধকরা কী উপায় বলে গিয়েছেন? লিখেছেন সোমব্রত সরকার।

ইউরোপের সৌন্দর্য
ইউরোপের সৌন্দর্য, ইতিহাস ও সংস্কৃতি নিয়ে রীতা ঘোষের বই ‘অপরূপ ইউরোপ’, যেখানে ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, ইংল্যান্ড, তুরস্কসহ নানা দেশের মনোমুগ্ধকর ভ্রমণকথা উঠে এসেছে।

ফিরে দেখা
হাওড়া স্টেশনে ট্রেনের হুইসেল, স্মৃতির পাতায় পুরোনো গল্পের ঝলক! কিছু মুহূর্ত শুধু মনে থাকে, হারায় না! 🚂✨ #স্মৃতিরপাতা #ভ্রমণ

পুরাণ ও ইতিহাসে সিদ্ধিদাতা
গণেশ ঠাকুর সর্বজ্ঞ ও সিদ্ধিদাতা, যাঁর কাহিনি সীমাহীন। ভারতসহ বহু দেশে ভিন্ন রূপে তিনি পূজিত হন, সমৃদ্ধ পুরাণ ও ইতিহাসের সঙ্গে।

পদ্মকুমার
পদ্মকুমার, যিনি অগ্রমহিষীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যুবরাজ হিসেবে রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে, মায়ের বিশ্বাসঘাতকতার ফলে চোরপ্রপাতে নিক্ষিপ্ত হন। কিন্তু নাগরাজের সহায়তায় তিনি বেঁচে ফিরে, তপস্যায় মনোনিবেশ করেন।

যাত্রাপথের যন্ত্রণা পেরিয়ে
তাঁরা ‘হিটলার’ দেখেছেন, ‘কার্ল মার্কস', ‘আমি সুভাষ বলছি’, ‘সূর্যশিখা’, ‘সন্ন্যাসী তরবারি’, ‘স্পার্টাকাস', ‘হেলেন অব ট্রয়'-এর মতো পালা দেখেছেন। সেই দর্শকরা আজ আর নেই। যেন হাহাকার করে ওঠেন অনল।

পঞ্চচুল্লি আর চেরিফুলের দেশে
পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথে অজানা এক সফর, যেখানে প্রতিটি বাঁকেই লুকিয়ে আছে নতুন বিস্ময়!

গদ্যের ভিতরে রবীন্দ্র অন্বেষণ
কালীকৃষ্ণ গুহের ‘গদ্যসংগ্রহ ১’ বাংলা কবিতা, রবীন্দ্রসঙ্গীত ও সাহিত্য বিশ্লেষণের এক অনন্য সংকলন, যেখানে কবিদের সৃষ্টিজগতের গভীর অনুভূতি ও ব্যাখ্যা চিত্রের মতো উঠে এসেছে।

খনা কে? কেন প্রাসঙ্গিক তাঁর বচন?
২৫ জানুয়ারি, ২০২৫-এর 'সাপ্তাহিক বর্তমান'-এ বিদূষী নারী খনার জন্মবৃত্তান্ত এবং তাঁর বচন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাঁর বচনে কৃষক সমাজের গভীর প্রতিফলন দেখা যায় এবং খনার আবির্ভাব প্রায় চতুর্থ থেকে পঞ্চম শতাব্দীর মধ্যে।