
কুশে ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৮। আমি ঢাকায় ছিলাম। সে সময়ের জনপ্রিয় পত্রিকা ‘সচিত্র সন্ধানী' ও ‘সন্ধানী প্রকাশনী'র কর্ণধার গাজী সাহাবুদ্দিনের বাড়িতে স্বনামধন্য সমাজদার্শনিক ও যুগস্পর্শী আত্মজীবনী রচয়িতা আনিসুজ্জামানের সঙ্গে সমাজ সাহিত্য ইতিহাস জড়িত নানা প্রসঙ্গে গভীর আড্ডায় আলোচনায় কাটিয়ে রাত বারোটার ঠিক আগে ঢাকার রাস্তার জনজোয়ারে পা মিলিয়েছিলাম। তখনও পদাতিক ভিড় তেমন শুরু হয়নি, তখনও রাস্তায় তরুণ-তরুণীদের আলপনা দেওয়ার কাজ চলছে। এরপর দ্বিপ্রহর পর্যন্ত শহিদস্মরণসংগীত 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি' আর রাস্তা ভাসানো জনসমুদ্রে সবই শুধু বাংলা ভাষার জন্য সবটাই শুধুমাত্র বাঙালির মিছিল, দেখতে দেখতে শুনতে শুনতে, সেই মহা মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে বুক তোলপাড় করে উঠেছিল। এই প্রসঙ্গে কবি বেলাল চৌধুরী ‘ভ্রমণ’ মে ১৯৯৮ সংখ্যায় লিখেছেন:
১৯৪৮-এর ২১ মার্চ ঢাকার রেসকোর্সে গভর্নর জেনারেল জিন্নাহ্ ইংরিজি ভাষণে বলেছিলেন, 'এ কথা তোমাদের পরিষ্কারভাবে বলে দেওয়া দরকার যে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। অন্য কোনও ভাষা নয়। কেউ যদি এ ব্যাপারে তোমাদের বিভ্রান্ত করে তাহলে মনে করবে সে হচ্ছে রাষ্ট্রের শত্রু।' এর তিনদিন পরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসবে জিন্নাহ্ আবার বললেন, পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি ঢাকায় পল্টনের জনসভায় উজীরে আজম খাজা নাজিমুদ্দিনও একই কথা ঘোষণা করলেন। ওই বছর ৩০ জানুয়ারি বাংলাভাষার মর্যাদার দাবিতে ধর্মঘট ও ৩১ জানুয়ারি রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বানে সর্বদলীয় সমাবেশ হয়। ফেব্রুয়ারি পালিত হয় ছাত্রদের হরতাল। ২১ ফেব্রুয়ারি প্রাদেশিক পরিষদের বাজেট অধিবেশনে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বাংলার দাবি পেশ করার দিন স্থির হয়। কিন্তু তার একদিন আগেই এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হল। ২১ ফেব্রুয়ারি সারা দিন ধরে হাজার হাজার ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে আইন অমান্য করে। প্রথমে পুলিশের ট্রাকে ছাত্রদের তুলে নেওয়া, তারপর কাঁদানে গ্যাস, তারপর বিকেল চারটেয় গুলি। রাস্তায় লুটিয়ে পড়ল জব্বার, রফিক, বরকত। মাতৃভাষার জন্য ছাত্রদের রক্তে লাল হল ঢাকার রাস্তা। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি। বাঙালির চির শোকের, বাংলা ভাষার চির গর্বের একইসঙ্গে স্মরণানুষ্ঠান ও মহোৎসব।
This story is from the March 2025 edition of Bhraman.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the March 2025 edition of Bhraman.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In

ইয়েলবং
গুহার মধ্যে রুমতি নদীর পাথুরে খাতে হাঁটুজলে বুকজলে হাঁটা, উপর থেকে ঝরে পড়া নদীর জলে ভিজে যাওয়াইয়েলবংয়ে নদীখাত পদযাত্রার সেরা সময় মার্চ-এপ্রিল।

চোপতা তুঙ্গনাথ আউলি গরসন বুগিয়াল
হরিদ্বার থেকে দেবপ্রয়াগ, রুদ্রপ্রয়াগ, কুণ্ড হয়ে চোপতা। চোপতা থেকে তুঙ্গনাথ, চন্দ্রশিলা। তারপর যোশিমঠ থেকে বদ্রীনাথ, আউলি হয়ে গরসন বুগিয়াল। গাড়োয়ালের নিসর্গপথে বেড়ানোর সেরা সময় গ্রীষ্মকাল।

ভাগামনের চা-বাগানে
চা-বাগান, বুগিয়াল আর পাইনবনে ছাওয়া গাঢ় সবুজ ভাগামনে সারাবছর যাওয়া চলে। গ্রীষ্মে তাপমাত্রা ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করে। ভাগামনের বাড়তি পাওনা প্যারাগ্লাইডিং।

নতুন পথে গোকিও হ্রদ অভিযান
থোনাক লা (৫,৪১৬ মিটার) আর রেঞ্জো লা (৫,৪৩৫ মিটার)-য় দাঁড়িয়ে সোজা তাকালে আকাশের গায়ে ঝকঝক করে এভারেস্ট শৃঙ্গ, আর চোখ নামালে হিমালয়ের নীলকান্তমণি গোকিও হ্রদ। এভারেস্টের পাড়ায় দু'দিক থেকে গোকিও হ্রদ অভিযানের সেরা সময় গ্রীষ্মকাল।

রণথম্ভোরের রাজকাহিনি
রণথম্ভোর অরণ্যে যাওয়া চলে ১ অক্টোবর থেকে ৩০ জুন। তবে, গ্রীষ্মে প্রখর দাবদাহ সহ্য করে জলের ধারে অপেক্ষা করলে বাঘের দেখা পাওয়ারই কথা।

মেঘালয় ভ্রমণ
একের পর এক জলপ্রপাত, হ্রদ, নদী, রুট ব্রিজ, প্রাকৃতিক গুহা— সব কিছু নিয়ে মেঘালয় প্রাকৃতিক সম্পদের এক অফুরন্ত ভাণ্ডার। বেড়ানোর সেরা সময় মার্চ থেকে জুন। তাপমাত্রা এ-সময় ১৬ থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করে।

হাব্বা খাতুনের দেশে
কাশ্মীরের চেনাপথ ছেড়ে এক অচেনা কাশ্মীর ভ্রমণ। মারশেরি, বাঙ্গাস, লোলাব, মচ্ছল ও গুরেজ উপত্যকা। গুরেজ উপত্যকায় যেতে হলে যে গিরিবা পেরতে হয়, সেই রাজদান পাস শীতের মাসগুলোয় বরফে ঢাকা থাকে।

লিপুলেখ থেকে কৈলাস পর্বত দর্শন
কুমায়ুন হিমালয়ের লিপুলেখ গিরিবর্তে দাঁড়ালে দেখা যায় সুদূর তিব্বতের কৈলাস পর্বত। গাড়ি চলে যায় লিপুলেখ পাস পর্যন্ত। তবে, লিপুলেখ পাসে যেতে সেনাবাহিনীর তাৎক্ষণিক অনুমতি লাগে। নাবি থেকে নাভিধাং হয়ে লিপুলেখ পাস ৩০ কিলোমিটার । নাবি থেকে আরেক পথে জলিংকং হয়ে আদি কৈলাসও ৩০ কিলোমিটার। পার্বতী সরোবরের ধারে আকাশ আলো করে দাঁড়িয়ে আছে আদি কৈলাস।

আয়ারল্যান্ডের পথে-প্রান্তরে
সাগর, নদী, হ্রদ, আদিগন্ত ঢেউখেলানো সবুজ উপত্যকা, প্রাচীন সব দুর্গ, প্রাসাদ, আড্ডাখানা নিয়ে আয়ারল্যান্ড গ্রীষ্মে ভারি মনোরম।