চাই সবার জন্য স্বাস্থ্যবিমা

গরিব নন, বড়লোকও নন, ভারতে এমন মধ্যস্তরের লোকের সংখ্যা বিপুল। এঁদের জন্য সরকার কীভাবে সহজে স্বাস্থ্যবিমার ব্যবস্থা করতে পারে, তার সুলুকসন্ধান দিলেন— ডাঃ দেবী শেঠি।

যেসব দেশ বিনামূল্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যব্যবস্থার বন্দোবস্ত করতে পেরেছে, তাদের মধ্যে তিনটি বিষয়ে মিল পাওয়া যাবে— এক, তারা ছোট দেশ। যে দুই, তাদের করের সঙ্গে জিডিপির অনুপাত ৩০ শতাংশ বা তার চেয়েও বেশি। তিন, তারা জিডিপির ১০ শতাংশের বেশি স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় করে। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ ভারতে সেখানে করের সঙ্গে জিডিপির অনুপাত ১১.৭ শতাংশ এবং এখানে জিডিপির মাত্র ৩.১৬ শতাংশ স্বাস্থ্যখাতে খরচ করা হয়। এর মধ্যে সরকারের অবদান মাত্র ১.২৮ শতাংশ এবং সাধারণ মানুষের পকেট থেকে যায় ১.৫২ শতাংশ। এই অবস্থায় সরকার রাতারাতি স্বাস্থ্যখাতে বিপুল খরচ করবে, এটা আশাই করা যায় না। 

সৌভাগ্যবশত, এদেশে দারিদ্র্যসীমার নাচে বসবাসকারী মানুষ আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু ভারতে এমন কোটি কোটি মানুষ আছে, যারা আপাতত দারিদ্র্যসীমার উপরে আছে বটে, কিন্তু কোনও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার একটিমাত্র বিল ভরলেই, তার ধাক্কায় হড়কে ওই সীমার নীচে চলে যাবে। এদেশে এমন ৩০ কোটি বাসিন্দা আছেন, যাঁরা যে কোনও হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ বহন করতে অক্ষম। কিন্তু হ্যাঁ, চিকিৎসাবিমার টাকা মেটানোর ক্ষমতা রাখেন। সুতরাং ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্যব্যবস্থার বদলে আমাদের বরং দরকার একটি ‘সর্বজনীন সংহত স্বাস্থ্যবিমা’ ব্যবস্থা। যেখানে প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি ও টার্শিয়ারি স্বাস্থ্য পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। "