ঐতিহাসিক রেশম পথে

যাঁরা বিশালাকায় প্রকৃতির বুকে নিজেকে আবিষ্কার করতে চান নতুনভাবে, বরং তাঁরাই আসুন এই ট্যুরে। লিখেছেন দেবিকা বসু দাশগুপ্ত।

-  দেবিকা বসু দাশগুপ্ত।

পূর্ব সিকিমের রেশম পথ, এক প্রাচীন পার্বত্যপথ। খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী থেকে প্রায় ২০০০ বছর তিব্বত ও চীনের সঙ্গে অবিভক্ত বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলের সংযোগ ঘটেছিল। ঘটেছিল অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক আদানপ্রদান। প্রায় সাড়ে ৬০০০ কিমি দীর্ঘ এই পথে তিব্বত ও চীন থেকে প্রধান উপাদান হিসাবে আসত সিল্ক তাই এই পথের নাম সিল্ক রুট। প্রাচীন সেই পথ ছিল পাথুরে, বন্ধুর— আজ সে পথ বাঁধানো। আগে এই পথে শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর গাড়িই চলত। পরে সাধারণ মানুষের জন্য এই পথ খুলে দেওয়া হয়।

অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের খনি এই সিল্ক রুট। সিকিমের এই অংশটি শুধুমাত্র তাঁদের জন্য, যাঁরা খুব কাছ থেকে প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে চান। অপার মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়ে থাকতে চান বরফে ঢাকা হিমালয়ের দিকে। সাক্ষী হতে চান জুলুকের বিখ্যাত জিগজ্যাগ দেখে এক অনন্য অনুভূতির, শিহরিত হতে চান ইতিহাসখ্যাত এই রাস্তার মধ্যে দাঁড়িয়ে— এই ট্যুর শুধুমাত্র তাঁদেরই জন্য।

সিল্ক রুট ঘোরার সেরা সময় অক্টোবর থেকে মে। আর বরফে ঘেরা সিল্করুট দেখতে গেলে যেতে হবে ডিসেম্বর, জানুয়ারিতে। তবে অনেক সময় অতিরিক্ত বরফের কারণে ওই সময় রাস্তা বন্ধ থাকে। আমাদের যাত্রা ছিল অক্টোবর মাসে,

দুর্গাপুজোর ঠিক পরে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নামতেই এগিয়ে এলেন ড্রাইভারজি। উঠে পড়লাম পূর্ব নির্ধারিত গাড়িতে। উদ্দেশ্য সিলারিগাঁও। পৌঁছতে পৌঁছতে প্রায় সন্ধ্যা নামে নামে। সারাদিনের ক্লান্তিতে চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু। সঙ্গে শীতও লাগছে বেশ। তাই আর বেশি রাত না করে আমরা তাড়াতাড়ি ডিনার সেরে চলে গেলাম কম্বলের তলায়।