কেনিয়ার জলে জঙ্গলে

ওয়াইফাই, সভ্যতার উচ্চনাদ থেকে বহু ক্রোশ দূরে কেনিয়ার অরণ্য এখনও বেঁচে আছে আদিম নীরবতাকে আশ্রয় করে। লিখেছেন ডঃ সঞ্জীব রায়।

- ডঃ সঞ্জীব রায়।

কেনিয়া দেশটির কথা মনে এলেই অলিম্পিকের দৌড়ে ওদের একচেটিয়া সাফল্যের কথা মনে পড়ে। টিভির পরদায় ওদেশের দৌড়বীরদের দেখে ভাবতাম, কী করে একটা গরিব দেশের পক্ষে এটা সম্ভব হচ্ছে! পরবর্তীকালে জেনেছি যে জন্মসূত্রে পাওয়া লম্বা পা ও পাখির মতো হালকা শরীর এঁদের সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি। ক্যালেনজিন সম্প্রদায়ভুক্ত কেনিয়ার দৌড়বীরদের সাফল্য বাস্তবিকই অবাক করে দেওয়ার মতন। এই সম্প্রদায়ভুক্ত বহু দৌড়বীর তাঁদের ব্যক্তিগত সাফল্যকে মূলধন করে দেশের পতাকাকে বিশ্বের দরবারে গৌরবমণ্ডিত করেছেন। এই তালিকায় সর্বাগ্রে আসবে কিপ কেইনোর নাম।

অন্যদিকে কেনিয়া দেশটিতে বিস্তীর্ণ সাভানা অঞ্চলে অজস্র তৃণভোজী এবং মাংসাশী জীবজন্তুর বসবাস। এই জীবজন্তুদের কাছ থেকে দেখার আশায় পৃথিবীর সমস্ত প্রান্ত থেকেই পর্যটকরা হাজির হন। তাঁদের আগমনে নিঃসন্দেহে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়কে সমৃদ্ধ করে। তবে কেনিয়ার প্রধান রপ্তানিদ্রব্য হল কফি এবং চা। তার থেকেই সবচেয়ে বেশি-বিদেশি মুদ্রা উপার্জন হয়। সমগ্র আফ্রিকার মতো কেনিয়াতেও বহু উপজাতি গোষ্ঠী আছে। এই উপজাতির সংখ্যা চল্লিশ। তাদের মধ্যে কিকুইউ সর্বাপেক্ষা প্রভাবশালী। তাদের হাতেই রাজনৈতিক ক্ষমতা। কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবি মাসাই শব্দ। এর অর্থ ঠান্ডা জলাভূমি। কেনিয়ার মাঝখান দিয়ে যদিও বিষুবরেখা চলে গিয়েছে। তথাপি নাইরোবি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫,৫০০ ফুট উঁচুতে হওয়ায় সারা বছরই গরম অপেক্ষাকৃত কম

দিল্লি থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ানে সাড়ে ছ'ঘন্টা কাটানোর পর নাইরোবি বিমানবন্দরে নামলাম। নিতান্ত সাদামাটা এই বিমানবন্দরের পোশাকি নাম, ‘জোমো কেনিয়াট্টা'। এই জোমো কেনিয়াট্টা ছিলেন স্বাধীন কেনিয়া প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি। দীর্ঘদেহী এই ব্যক্তিত্ব দেশের সর্বত্রই পূজিত। তিনিই জাতির পিতা। শহরজুড়ে, হাটেবাজারে সর্বত্রই তাঁর ছবি ও স্ট্যাচু।