প্রেতসাধনা কী? এই সাধনায় গৃহস্থের কী মঙ্গল হয় ?

দেহকে ছাপিয়ে যে এগিয়ে গিয়েছে সে হল প্রেত। দে সাধক বলেন, ‘প্রইক্ত দেহটা ছেড়ে তোমাকে এগিয়ে যেতেই হবে।' দেহটাকে পেরিয়ে যাওয়া, অতিক্রম করার সাধনাই প্রেত সাধনা। মানুষ যখন মারা যায় তখনই তো ইহলোক অতিক্রম করে! জীবিত অবস্থায় দেহকে পেরিয়ে চলে সে যাবেই বা কী করে? সাধকরা বলেন, ‘মৃত্যুতে মানুষ যখন দেহকে ছেড়ে যায় তখন প্রেতাবস্থা। আবার বেঁচে থেকেও কেউ কেউ দেহকে ছেড়ে থাকতে পারেন। এটাও তাঁর প্রেতাবস্থা।' বেঁচে থেকে দেহকে ছেড়ে যাঁরা চলে যেতে পারেন তাঁরাই হলেন প্রেতসাধক।
দেহ পুড়ে ছাই হয়ে গেলে সে আর ফিরে আসে কী করে— ‘ভস্মীভূতস্য দেহস্য পুনরাগমনং কুতঃ।' চার্বাকরা কবেই তো এই প্রশ্ন করেছিলেন। তাঁরা ছিলেন নাস্তিক। পরলোক ও আত্মাতে বিশ্বাসী নন চার্বাকবাদীরা। তাঁরা বলেন, ‘দেহ পুড়ে গেলে, সমাধি দিয়ে দিলে মানুষ আর ফিরে আসবেটা কী করে? দেহ যখন নেই, পরলোক বলেও কিছু নেই। আত্মা থাকারও প্রশ্ন নেই তাই। আত্মা নেই তো পরমাত্মাও নেই।' একটা গল্প আছে। সেই নগরে সবাই পরস্পরের মধ্যে জটলা করে বলাবলি করছে, একটা নেকড়ে বাঘ নগর পার্শ্ববর্তী জঙ্গল থেকে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে, কোনও কোনায় লুকিয়ে রয়েছে। বাজার থেকে এই খবর শুনে দার্শনিক চার্বাকের স্ত্রী বাড়ি এসে স্বামীকে বলছেন, “তুমি কি শুনেছ, একটা নেকড়ে ঢুকে পড়েছে আমাদের শহরে?
বউয়ের কথা শুনে মৃদু হেসে চার্বাক বললেন, ‘তুমি কি নিজের চোখে দেখেছ নাকি নেকড়ে বাঘটাকে?' স্ত্রী বললেন, ‘সবকিছু কি নিজের চোখে দেখা যায়? ' সকালবেলা নগরের মাঝখানে থাকা তোরণের নীচে খুব ভিড় দেখে চার্বাকের স্ত্রী এগিয়ে গেলেন। রাস্তার একপাশে শুকনো কাদার ওপর নেকড়ের পায়ের ছাপ। তাই দেখে তড়িঘড়ি বাড়ি এসে চার্বাকের স্ত্রী আতঙ্কিত হয়ে বলল, 'বাঘ ঢুকে পড়েছে আমাদের এলাকার ভেতরেই। এইমাত্র আমি নেকড়ের পায়ের ছাপ দেখে এলাম।” চার্বাক বললেন, ‘তাই! তুমি কি ভয় পেয়েছ নাকি ? ” স্ত্রী বললেন, ‘বাঘের পায়ের ছাপ যখন দেখছি তখন সবাইকার কথাই তাহলে ঠিক। নেকড়েটা লুকিয়ে আছে কোথাও।' চার্বাক বললেন হেসে, 'ভদ্রে, একদমই ঠিক নয় সেটা। ওটা রটনা। তোমাকে আতঙ্কিত করার জন্যই তুমি ঘুমিয়ে পড়লে আমি রাতে উঠে ওই তোরণের নীচে নিজের হাতের মুঠো করে ছাপ ফেলে এসেছি।' ‘ষড়দর্শন সমুচ্চয়’ গ্রন্থে চার্বাকের এই গল্পটি আছে। লেখক হরিভদ্রসূরি। চার্বাক দর্শনের মধ্যেও কথাটি রয়েছে, ‘ভদ্রে বৃকপদ পশ্য।'
Esta historia es de la edición March 22, 2025 de Saptahik Bartaman.
Comience su prueba gratuita de Magzter GOLD de 7 días para acceder a miles de historias premium seleccionadas y a más de 9,000 revistas y periódicos.
Ya eres suscriptor ? Conectar
Esta historia es de la edición March 22, 2025 de Saptahik Bartaman.
Comience su prueba gratuita de Magzter GOLD de 7 días para acceder a miles de historias premium seleccionadas y a más de 9,000 revistas y periódicos.
Ya eres suscriptor? Conectar

জীবন ঘিরে যত জিজ্ঞাসা
মানুষের জীবন নানা রঙের গল্পে ভরা, যেখানে প্রতিটি সম্পর্ক, চাওয়া-পাওয়া ও অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। আইভি চট্টোপাধ্যায়ের ‘বারো ২ আরো’ গল্প সংকলন জীবনের সেই সূক্ষ্ম বাস্তবতাকে গভীর সংবেদনশীলতায় তুলে ধরে।

ইউরোপের সৌন্দর্য
ইউরোপের সৌন্দর্য, ইতিহাস ও সংস্কৃতি নিয়ে রীতা ঘোষের বই ‘অপরূপ ইউরোপ’, যেখানে ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, ইংল্যান্ড, তুরস্কসহ নানা দেশের মনোমুগ্ধকর ভ্রমণকথা উঠে এসেছে।

ফিরে দেখা
হাওড়া স্টেশনে ট্রেনের হুইসেল, স্মৃতির পাতায় পুরোনো গল্পের ঝলক! কিছু মুহূর্ত শুধু মনে থাকে, হারায় না! 🚂✨ #স্মৃতিরপাতা #ভ্রমণ

পুরাণ ও ইতিহাসে সিদ্ধিদাতা
গণেশ ঠাকুর সর্বজ্ঞ ও সিদ্ধিদাতা, যাঁর কাহিনি সীমাহীন। ভারতসহ বহু দেশে ভিন্ন রূপে তিনি পূজিত হন, সমৃদ্ধ পুরাণ ও ইতিহাসের সঙ্গে।

পদ্মকুমার
পদ্মকুমার, যিনি অগ্রমহিষীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যুবরাজ হিসেবে রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে, মায়ের বিশ্বাসঘাতকতার ফলে চোরপ্রপাতে নিক্ষিপ্ত হন। কিন্তু নাগরাজের সহায়তায় তিনি বেঁচে ফিরে, তপস্যায় মনোনিবেশ করেন।

যাত্রাপথের যন্ত্রণা পেরিয়ে
তাঁরা ‘হিটলার’ দেখেছেন, ‘কার্ল মার্কস', ‘আমি সুভাষ বলছি’, ‘সূর্যশিখা’, ‘সন্ন্যাসী তরবারি’, ‘স্পার্টাকাস', ‘হেলেন অব ট্রয়'-এর মতো পালা দেখেছেন। সেই দর্শকরা আজ আর নেই। যেন হাহাকার করে ওঠেন অনল।

পঞ্চচুল্লি আর চেরিফুলের দেশে
পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথে অজানা এক সফর, যেখানে প্রতিটি বাঁকেই লুকিয়ে আছে নতুন বিস্ময়!

গদ্যের ভিতরে রবীন্দ্র অন্বেষণ
কালীকৃষ্ণ গুহের ‘গদ্যসংগ্রহ ১’ বাংলা কবিতা, রবীন্দ্রসঙ্গীত ও সাহিত্য বিশ্লেষণের এক অনন্য সংকলন, যেখানে কবিদের সৃষ্টিজগতের গভীর অনুভূতি ও ব্যাখ্যা চিত্রের মতো উঠে এসেছে।

খনা কে? কেন প্রাসঙ্গিক তাঁর বচন?
২৫ জানুয়ারি, ২০২৫-এর 'সাপ্তাহিক বর্তমান'-এ বিদূষী নারী খনার জন্মবৃত্তান্ত এবং তাঁর বচন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাঁর বচনে কৃষক সমাজের গভীর প্রতিফলন দেখা যায় এবং খনার আবির্ভাব প্রায় চতুর্থ থেকে পঞ্চম শতাব্দীর মধ্যে।