মায়াবন বিহারিণী

নকল আর আসল— কে বেশি আপন? অনুপম ফিরে এসেছে, কিন্তু সম্পর্কের এই সূক্ষ্ম জটিলতায় কি সত্যিই স্বস্তি আছে? বাস্তব আর বিজ্ঞানের এই দ্বন্দ্বে কে জিতবে

- বৈশাখী ঠাকুর

আকাশলীনার অভিব্যক্তিটা পড়ার চেষ্টা করছিল ঋতজা। তার আত্মজ ফিরছে জেনে তার কি ভাল লাগছে, আ নাকি একটা অস্বস্তি কাজ করছে? অনুপমের ক্লোনের সঙ্গে তারা এতই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে যে, আসল অনুপমের অনুপস্থিতি প্রায় ভুলতেই বসেছিল। অনুপম নিজেই তার ক্লোনের অনুমতি দিয়ে গিয়েছিল, তার পাঁচ বছরের ছেলে যাতে এত তাড়াতাড়ি পিতৃহারা না হয়। এই দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে সে যে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে সেটাই অনিশ্চিত ছিল। আকাশলীনা আর ঋতজা উভয়ই খানিক চিন্তিত অনুপম(ক্ল ব্যাপারটা কী ভাবে নেবে তাই নিয়ে! সকালে উঠে দাড়ি কামাচ্ছিল অনুপম(ক্ল)। দাঁড়ানোর ভঙ্গি, কাটার সময় এমন ভাবে ভুরুটা কুঁচকে থাকে— হুবহু এক। প্রথম প্রথম দেখে অবাক হয়ে যেত ঋতজা। বিজ্ঞানের কত উন্নতি! এর পরেই বাথরুমে কোনও না কোনও অছিলায় ডাকবে, তার পর আশ্লেষে তাকে আদর করবে, জড়িয়ে ধরে। এই কথা নিশ্চয়ই আগে থেকে অনুপমকে(ক্ল) কেউ বলে দেয়নি। তবুও কোন অলৌকিক বলে সেই গুপ্ত, গূঢ় অভিসারের কাহিনি তার জানা! প্রথম দিন শোয়ার সময় এমন ভাবে গায়ে পা তুলে দিয়েছিল যে, ঋতজার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল।