নম্বর নয়, পড়তে হবে ভালোবেসে

‘ও এত সহজে করে ফেলছে, তুই পারছিস না!’ এই ধরনের নীতি থেকে যত তাড়াতাড়ি সরে আসবেন বাচ্চাদের জন্য সেটা ততটাই মঙ্গল।

- লিখেছেন অভিনন্দন দত্ত

শুধু পড়া কেন, যে কোনও তথ্য মনে রাখতে হলে সেই তথ্যের সঙ্গে মস্তিষ্কের একটা যোগসূত্র তৈরি হওয়া প্রয়োজন। তাই আজকে আমি ছাত্রছাত্রীদের পড়া মনে রাখার জন্য কোনও বিশেষ টিপস বা টোটকা দেব না। বরং একই সঙ্গে অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের কতগুলো বিষয় মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।

• পড়াশোনা একটা অভ্যেস। তার সঙ্গে কোথাও যেন ভালোবাসাও জড়িয়ে থাকে। শুধু তাগিদে অর্থাৎ আমাকে পরীক্ষায় নম্বর পেতে হবে— এই মানসিকতা থেকে যদি ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করে, তাহলে কিন্তু সমূহ বিপদ। গল্পের বই পড়তে যেমন ছোটরা পছন্দ করে, ঠিক তেমনই পড়ার বইয়ের সঙ্গেও একটা ভালো লাগার সম্পর্ক তৈরি না হলে পড়া মনে রাখাটা সবসময়েই কঠিন মনে হবে।

• এই প্রসঙ্গে একটা বিষয় একটু উল্লেখ করতে চাই। করোনার জন্য বিগত দু’বছর বাচ্চারা রীতিমতো বাড়িতে বন্দি ছিল। আমরা শিক্ষকরাও নিয়মিত ওদের অনলাইন ক্লাস নিয়েছি। আমাদের কাছেও এই অনলাইন ক্লাসের বিষয়টা ছিল নতুন। কিন্তু যথাসাধ্য চেষ্টা করেই তো আমরা এই দু’বছর ওদের পড়িয়েছি। কতটা পেরেছি সেটা ছাত্রছাত্রীরাই হয়তো আরও ভালো বলতে পারবে। কিন্তু আজকে যখন ওরা স্কুলে আসছে, তখন বুঝতে পারছি এই পড়াশোনাটা কিন্তু সম্পূর্ণ একমুখী হয়েছে। ওরা পড়া শুনেছে বটে। কিন্তু বাড়িতে সেটা উত্তর আকারে লেখার অভ্যেস করেনি। ফলে তাদের মনের মধ্যে সেই পড়া কোনও ছাপ ফেলতে পারেনি। এর জন্য কিন্তু অভিভাবকরা অনেকটাই দায়ী। অনলাইন ক্লাস করতে গিয়ে কোনও কোনও বাচ্চার মোবাইলে আসক্তি তৈরি হয়েছে। কেউ হয়তো শুধু ক্লাসটাই করেছে। কিন্তু পরে সেই পড়াটাকে রিভাইস করেনি। ফলে আজকে ছাত্রছাত্রীদের সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ উপস্থিত হয়েছে। স্কুলে এসে নতুন পড়ার পাশাপাশি গত দু’বছরের পড়াটাও ঝালিয়ে নিয়ে তাদের পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে।