ছবির দেশে কবিতার দেশে

বিক্ষোভ চলছে। সমীক্ষা বলছে, অতি-দক্ষিণপন্থী শক্তি ফ্রান্সের বর্তমান সরকারের পতন ত্বরান্বিত করতে পারে।

‘মাকরঁ জমানায়, আমাদের নাকের রক্তক্ষরণ কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না। অথচ দোকানে গিয়ে যে একটু গজ বা তুলো কিনব, সেটুকু আর্থিক সামর্থ্যও আর অবশিষ্ট নেই’— বলছেন আন্দোলনের এক মুখ।

প্যারিস। গ্লাস দ্য লা কঁকর্দ। সুবিশাল চত্বরে সমবেত হয়েছেন হাজার হাজার আন্দোলনকারী। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে। গলা তুলেছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়া, সাংবাদিকের

প্রশ্নের জবাবে বলছেন, ‘লড়াইয়ের হাত যাতে মজবুত হয় তাই আমরা তরুণরাও কাঁধ মিলিয়েছি বরিষ্ঠদের কাঁধে, গলা মিলিয়েছি বাষট্টিতে অবসরের অধিকারের দাবিতে। তা ছাড়া এই দাবি তো আমারও ভবিষ্যৎ সুরক্ষার দাবি।' উল্লেখ্য, সরকার প্রস্তাবিত সংস্কারে অবসরের বয়স-সীমা বাষট্টি থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে চৌষট্টি। চাষিরা ঝুড়ি বোঝাই করে টাটকা সব্জি নিয়ে এসেছেন ধর্মঘটী রেলশ্রমিকদের জন্য, লেবানিজ় রেস্তরাঁ-মালিক দেশোয়ালি চপ বিলোচ্ছেন প্রতিবাদীদের হাতে হাতে, তাঁকে সাহায্য করছে একদল ইশকুল পড়ুয়া। আর-একটু পরে যখন লগুড়ধারী পুলিশের তাড়া খেয়ে আন্দোলনকারীরা ছুটবেন দিগ্বিদিকশূন্য, তাঁদের আশ্রয় দিতে বাড়ির দরজা খুলে দেবেন এলাকার বাসিন্দারাই। আপাতত ট্রাম্পেট, ফ্রেঞ্চ হর্ন, টিউবার সুরে, ড্রাম-বিটের তালে তালে এগিয়ে চলেছে বিশাল এই মিছিল। বাজার-চালিত ব্যক্তিসত্তার টুকরোগুলো জোড়া লেগে আবার যেন আস্ত সঙ্ঘবদ্ধ একটা সমাজ হয়ে উঠেছেন মানুষজন।

ফ্রান্স যে শুধু ছবি ও কবিতার দেশ নয়, সুরভিত শানেলের উত্তুঙ্গ বিলাসের মরূদ্যানও নয়, ফ্রান্স মানে যে আজও – প্রথমত ও প্রধানত— বারুদ, প্রতিরোধ, অন্যায়ের সামনে পিঠ নুইয়ে নয়, ঘাড় বেঁকিয়ে দাঁড়ানোর হিম্মত—