মণি ক র ণ হিন্দু-শিখের মিলনতীর্থ

তখন নানক মর্দানাকে বলেন একটা পাথরকে সরাতে। আর তখনই উষ্ণ প্রস্রবণটি বেরিয়ে পড়ে পাথর চাপা অবস্থা থেকে। মর্দানা চাপাটি তৈরি করে গরম জলে ফেলেন।

হেমন্তিকা কর হি ন্দু ও শিখ এই উভয় ধর্মেরই পরম তীর্থ মণিকরণ। হিমাচল প্রদেশের কুলু জেলায় ভুন্টারের কাছে ১৭৬০ মিটার উচ্চতায় পার্বতী উপত্যকায় অবস্থিত সুন্দর সাজানো শহর মণিকরণ। হিন্দু বিশ্বাস

অনুযায়ী মহাপ্লাবনের পর মনু নতুন করে জগৎ সংসার তৈরি করেছিলেন এই মণিকরণেই। আর সেই সূত্রেই মণিকরণ এত তাৎপর্যময়।

পুরাণ অনুযায়ী শিব-পার্বতী বেড়াতে বেরিয়েছিলেন পার্বতী উপত্যকায়। পৃথিবীর হিসেবে প্রায় ১১০০ বছর ধরে তাঁরা এই পার্বতী উপত্যকায় বিচরণ করেন। সুন্দর যেখানে শিবও

সেখানে। শিব সুন্দরের উপাসক, তাই পর্বতবেষ্টিত সবুজ পার্বতী উপত্যকায় শিব পার্বতী বেড়াবেন, প্রেমালাপ করবেন এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই। এখানে থাকাকালীন পার্বতীর কান থেকে মণিকুন্তল পড়ে যায়। শেষনাগ সেটি নিয়ে পালিয়ে যায় পাতালে। পার্বতী শিবকে বললেন মণি হারানোর কথা। শিব তাঁর অনুচরদের বললেন মণি খুঁজে আনতে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়। ভীষণ রেগে যান শিব। তাঁর তৃতীয় নয়ন উন্মীলিত

করেন। পৃথিবী কাঁপতে থাকে, ফুটতে থাকে নদীর জল। শেষনাগের কাছে পৌঁছয় সেই সংবাদ। শেষনাগ পাতাল ফুঁড়ে ফুটন্ত জলের ভেতর দিয়ে উঠে আসে। শিবের কাছে মণি ফেরত দেয়, সঙ্গে আনে আরও মণি রত্ন। শিবকে তুষ্ট করতে জল উঠে তৈরি হয় প্রস্রবণ। শিব নিজের মণিটি নিয়ে বাকি মণিগুলোকে পাথর করে চাপা দেন প্রস্রবণ।

শিবের মণি উদ্ধার থেকেই নাম মণিকরণ। প্রস্রবণের জল যথেষ্ট উষ্ণ। এই জল পবিত্র বলে মনে করা হয়। এটাও বলা হয় মণিকরণ দর্শন করলে কাশীদর্শনের প্রয়োজন নেই। জলের রোগ নিরাময় ক্ষমতা আছে। জল এতটাই উষ্ণ যে ভাত রান্না করাও যায়। এই কুণ্ডে স্নান করলে সব পাপ ধুয়ে যায়। শরীরের কোথাও কোনও ব্যথা বেদনা থাকলে তারও উপশম হয়। শিখ বিশ্বাস অনুযায়ী ১৫৭৪ সালে গুরু নানক এখানে আসেন মর্দানাকে সঙ্গে নিয়ে। মর্দানার খিদে পায়। কিন্তু কোনও