হীরক খচিত নগরী লুগানো

এখানকার পরিবহন ব্যবস্থা এতটাই উন্নত যে চারশো পাঁচশো কিলোমিটার পথ পাড়ি দিচ্ছি অথচ কিছুই মনে হয় না। দোতলা হাই স্পিড ট্রেন ছুটছে তিনশো কিলোমিটার গতিতে অথচ বিন্দুমাত্র ঝাঁকুনি নেই।

- ছন্দা বিশ্বাস

জামানি, ফ্রান্সের পরে এবারে ইতালি ভ্রমণের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়লাম। আগের রাতটা কাটিয়েছি সুইজারল্যান্ডের একটা বিখ্যাত শহর লুসার্নে। পরের দিন লুসার্ন স্টেশন থেকে প্রথমে এলাম লুগানোতে। এখান থেকে ট্রেন পাল্টে যেতে হবে ইতালির মিলান স্টেশনে। সেখান থেকে রোম। দীর্ঘযাত্রার পথ। তাই একটা দিন লুগানোতে কাটালাম। দক্ষিণ সুইজারল্যান্ডের টিসিনো ক্যান্টনমেন্টের অন্তর্গত একটি নগরী হল লুগানো। সুইজারল্যান্ডের অন্যতম এক পর্যটনকেন্দ্রও বটে। অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধশালী নগরী এই লুগানো। খুবই ব্যয়বহুল। সেরা আকর্ষণ হল এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। লুগানোর অবস্থান সুইজারল্যান্ড আর ইতালির মাঝখানে। পাহাড় দিয়ে ঘেরা লুগানো লেকের তীরে গড়ে ওঠায় রূপ যেন আরও খোলতাই হয়েছে। ২০২০ সালের লোক গণনানুসারে এখানকার লোকসংখ্যা ছিল প্রায় দেড় লাখ। টিসিন এবং ইতালিভাষী দক্ষিণ সুইজারল্যান্ডের সব থেকে বড় শহর এটি। সুইজারল্যান্ডের তৃতীয় বৃহত্তম আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ শহর লুগানো। ছোট্ট এই শহরে ইতালিয় সংস্কৃতির প্রভাব রয়েছে।

সুন্দর ঝকঝকে সাজানো গোছানো এই শহর জলরঙে আঁকা ছবির মতো। শহরের ভিতর দিয়ে লেকের গা ঘেঁষে চলেছে সুন্দর পাথুরে রাস্তা। আছে সুদৃশ্য গার্ডেন, পার্ক, লেকের পাশে গড়ে উঠেছে বহু নামী দামি হোটেল, রেস্তরাঁ। শহর ছাড়ালে চোখে পড়ে ছবির মতো সুন্দর সব গ্রাম। যেন পোস্টকার্ড পিকচার! পাহাড়ের ঢালে প্যাস্টেলে আঁকা ঘর বাড়ি। পাহাড়ের কোলে শায়িত সুন্দর এই নগরীতে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটে। লেকের জলে অবগাহনের জন্য আছে সুন্দর বাথিং বিচ। লেকের জলে বোটিং করার সুবিধা আছে। ঘুরে বেড়ানোর জন্য আছে পালতোলা দৃষ্টিনন্দন নৌকা। ভ্রমণের জন্যে ছোট বড় অসংখ্য ক্রুজ। সারাদিন ক্রুজ শিপে ঘুরে বেড়ানো যায় লেকের জলে। লুগানো লেকে জলবিহার পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়।