তিন ভাই বোন জ্যা, জ্যা... বলতে বলতে 'জ্যাজান’ বলে ফেলেছিলাম একদিন। সেভাবেই মহানায়ক হয়ে গিয়েছিলেন আমাদের জ্যাজান। ‘জেঠু' ডাকটা মুখ থেকে বেরত না। এই ডাকের আরও একটা কারণ থাকতে পারে। আমাদের বাবা, কাকারা ওদের জেঠিমাকে 'জ্যাজান' বলত। সেই ডাকটাই মহানায়কের ক্ষেত্রে হয়তো বাড়ির বড়রা আমাদের শিখিয়েছেন। আর জ্যাজান আমাদের ডাকতেন কুমি (কুমকুম) আর ঝিমু বা ঝিমি (ঝিমলি) বলে। আমাদের ভীষণ ভালোবাসতেন। কারণ আমরা বাড়ির দুই মেয়ে। আমরা তিন ভাই বোন ছিলাম। জ্যাজানের এক ছেলে গৌতম। বরুণকুমারের এক মেয়ে কুমকুম। আর তরুণকুমারের এক মেয়ে ঝিমলি। বাবা কাকা, জ্যাঠারা আমাদের আলাদা ভাবেননি কখনও। সারাক্ষণই ভেবেছেন গৌতম আমাদের এক ছেলে। আর দুই মেয়ে। এভাবেই আমরা মানুষ হয়েছি। সেই আদর, ভালোবাসাটা অনন্য।
নাম রহস্য ঠাকুরমা জ্যাজানকে উত্তম বলেই ডাকতেন। ওটাই ছিল ওঁর ডাকনাম। কিন্তু এই ‘উত্তম' নামটা ঠাকুরমার পছন্দ ছিল না। জ্যাজানের তো মামারবাড়িতে জন্ম হয়েছিল। ঠাকুরমার বাবা, মানে আমাদের বাবা, কাকাদের দাদামশায়ের যিনি গুরুদেব ছিলেন, তিনি হিমালয়ে থাকতেন। নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী বিভিন্ন ভক্তের বাড়িতে আসতেন। একদিন ছোট্ট জ্যাজানকে মামারবাড়ির ছাদে তেল মালিশ করে রোদে শুইয়ে রাখা হয়েছে। সেই গুরুবাবা তখন এসেছেন। তিনি সোজা ছাদে চলে গিয়েছিলেন। সদ্যোজাত বাচ্চাটিকে দেখে জিজ্ঞেস করেন, এই বাচ্চাটি কার? আমাদের ঠাকুরমার বাবা বলেছিলেন, এটি আমার নাতি। মেজ মেয়ে চপলার ছেলে। গুরুবাবা যখন জ্যাজানের কাছে গিয়েছিলেন তখন ছোট্ট জ্যাজান নাকি একগাল হেসেছিলেন। গুরুবাবা বলেছিলেন, এই ছেলেটির কপালের মাঝ বরাবর যে শিরা সেটা সোজা গিয়ে একটু বেঁকে গিয়েছে। শিরাটা যদি সোজা যেত তাহলে ও রাজা হতো। তবে ওর হাসি দিয়ে ও জগৎকে ভোলাবে। সেটা শুনে ঠাকুরমার বাবা নাতির নাম রেখেছিলেন ‘উত্তম’। কিন্তু ঠাকুরমার সে নাম একদমই পছন্দ ছিল না। অথচ উনি বাবার মুখের উপর কিছু বলতে পারেননি। পরবর্তীকালে যখন জ্যাজান সিনেমায় এলেন অরুণ চট্টোপাধ্যায় এবং অরূপ চট্টোপাধ্যায় পরপর দুটো নাম ফ্লপ হল, তখন উত্তম নামটা ব্যবহার করলেন। অরুণ, বরুণ, তরুণ— বাবার দেওয়া তিন ভাইয়ের নাম। আর জ্যাজানের ডাকনাম বরাবরই ছিল উত্তম।
Denne historien er fra September 2024-utgaven av Sukhi Grihakon.
Start din 7-dagers gratis prøveperiode på Magzter GOLD for å få tilgang til tusenvis av utvalgte premiumhistorier og 9000+ magasiner og aviser.
Allerede abonnent ? Logg på
Denne historien er fra September 2024-utgaven av Sukhi Grihakon.
Start din 7-dagers gratis prøveperiode på Magzter GOLD for å få tilgang til tusenvis av utvalgte premiumhistorier og 9000+ magasiner og aviser.
Allerede abonnent? Logg på
‘উত্তমকুমার দুঃখে কেঁদে ফেলেছিলেন’
মহানায়ক ছিলেন তাঁর বিয়ের বরকর্তা। তাছাড়াও বিভিন্ন ছবিতে নায়ক নায়িকার ভূমিকাতেও দেখা গিয়েছে তাঁদের। তাই তিনি খুবই কাছ থেকে দেখেছেন উত্তমকুমারকে। মজা করতেন, খেপাতেন তবু মহানায়ক কখনও রুষ্ট হননি তাঁর আচরণে। উত্তমকুমারকে নিয়ে নানা ব্যক্তিগত ঘটনার কথা জানালেন মাধবী মুখোপাধ্যায়।
‘প্রতিভাকে ঘষেমেজে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতেন উত্তমদা’
মহানায়কের সঙ্গে তাঁর অভিনীত বহু ছবি দর্শকমনে প্রবল দাগ কেটেছে। সমালোচকরা বলেন, তাঁর মতো অভিনেত্রী সে যুগে আর কেউ ছিল না। স্বয়ং উত্তমকুমারও তাঁকে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বলে স্বীকার করতেন। মহানায়কের প্রসঙ্গ উঠলেই আজও নস্টালজিক হয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খোলেন উত্তমকুমারের প্রিয় ‘সাবু’ ওরফে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়।
আমার উত্তমদা
মহানায়ক তাঁকে ভীষণ স্নেহ করতেন। ভাইয়ের মতো দেখতেন। শাসন ও করতেন অভিভাবকের মতোই। প্রথম সাক্ষাতে তবু উত্তমকুমারের সঙ্গে কথা বলার সাহস হয়নি তাঁর। পরবর্তীতে একসঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে মহানায়কের স্নেহচ্ছায়ায় এসে সমৃদ্ধ হয়েছেন। মহানায়কের জন্মমাসে তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানালেন মিঠুন চক্রবর্তী।
‘একজন বড় মনের মানুষ '
উত্তমকুমারকে ঘিরে তাঁর স্মৃতির অন্ত নেই। মহানায়কের স্নেহ না পেলে নাকি নিজের ফিল্মি কেরিয়ারই গড়ে তোলা হতো না তাঁর। এছাড়া উত্তমকুমারকে নিয়ে পারিবারিক বিভিন্ন গল্পও রয়েছে তাঁর সংগ্রহে। সেইসব কথাই জানালেন বিশ্বজিৎ।
‘গানটা ভীষণ ভালো বুঝতেন '
উত্তমকুমারের নিজের গাওয়া গান পরে রেকর্ড করার সুযোগ পান তিনি। তাঁর পছন্দের সারিতে ‘হিরো' হিসেবে উত্তম-ই সেরা। রেকর্ডিং স্টুডিওয় তাঁর গান শুনে খুব খুশি হয়েছিলেন মহানায়ক। ‘ধন্যি মেয়ে'-র গানের মাঝে সংলাপ কীভাবে বলবেন, তাও হাতেকলমে তাঁকে শিখিয়ে দিয়েছিলেন উত্তম। প্রিয় নায়কের জন্মদিনে স্মৃতিতর্পণে গায়িকা আরতি মুখোপাধ্যায়।
বাংলা ছবির সর্বকালের শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক নায়ক
উত্তমকুমারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল সন্তানতুল্য। মেকআপ রুমের আলাপ-আলোচনা থেকে ব্যক্তিগত স্তরে কথাবার্তা সবই হতো তাঁর সঙ্গে। আজও প্রেমের নায়ক বললে ‘উত্তমকাকু’-তেই ভোট পড়ে তাঁর। মহানায়কের স্মৃতিতে অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়।
‘দাদার ওই বউঠান ডাকটা আজও আমার কানে বাজে’
উত্তমকুমারের সঙ্গে ছবি করতে গিয়ে তাঁর নতুন নামকরণ হয়েছিল ‘বউঠান’। কাজের সূত্রে খুবই কাছ থেকে দেখেছেন মহানায়ককে। প্রতিভাময়, মানবদরদি, হাসিমুখের মানুষটি আজ যে আর নেই, বিশ্বাস হয় না তাঁর। স্মৃতিচারণায় লিলি চক্রবর্তী।
মহানায়ক আজও কেন অনন্য?
উত্তমকুমার এবং সুচিত্রা সেন। পরদার এই জুটিকে নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই আজও। তাঁদের সম্পর্কটা কীভাবে দেখতেন সুপ্রিয়া দেবী? মহানায়কের অন্য সব নায়িকা যেমন শর্মিলা ঠাকুর, তনুজা, অপর্ণা সেনই বা কী বলেন উত্তমকুমারকে নিয়ে? লিখেছেন সুমন গুপ্ত।
‘যত দিন যাচ্ছে বুঝতে পারছি, কী হারালাম
মহানায়ক ছিলেন তাঁদের শ্বশুরমশাই। পারিবারিক বৃত্তের বাইরে ‘বাবি’কে নিয়ে খুব কম কথা বলেন তাঁরা, অর্থাৎ উত্তমকুমারের দুই পুত্রবধূ সুমনা চ্যাটার্জি এবং মহুয়া চ্যাটার্জি। ভবানীপুরের বাড়ির একতলার ঘরে বসে এক ফুরিয়ে আসা বিকেলে স্মৃতির ঝাঁপি মেলে ধরলেন দুই পুত্রবধূ। যে বাড়ির দেওয়াল, ছাদ, কড়িবরগা আজও উত্তমময়।
'জ্যাজান ছিলেন বটগাছের মতো'
মহানায়ক তাঁদের জ্যাঠামশাই। শ্রদ্ধার, আবদারের, ভালোবাসার ‘জ্যাজান’। চ্যাটার্জি পরিবারের বটবৃক্ষ উত্তমকুমারকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করলেন তাঁর দুই ভাইঝি— বরুণকুমারের কন্যা মৌসুমী দত্ত এবং তরুণকুমারের কন্যা মনামী বন্দ্যোপাধ্যায়।