একজন প্রতিভাধর কবির নামের পাশে সর্বাধিক কতগুলো বিশেষণ ব্যবহার করা যেতে পারে? হঠাৎ এমন প্রশ্ন শুনলে স্বভাবতই হতচকিত হতে হয়। কিন্তু যদি প্রশ্নকর্তা নিজেই বিশেষণগুলি গড়গড় করে বলে যেতে থাকেন, পরিশেষে নিশ্চিত আবছায়া একটা অবয়ব ক্রমশ একটি কিংবদন্তির আকার ধারণ করবে বলেই বিশ্বাস। তখন অনেকেই স্বীকার করবেন এই পরিচয়টি চিনি, কিন্তু ওই পরিচয়টির কথা তেমন জানা ছিল না। কিংবা ওই পরিচয়টি তো বহু ব্যবহৃত, কিন্তু এটি একেবারেই অশ্রুত। আসলে যাঁকে নিয়ে এমনতর প্রসঙ্গের অবতারণা, তাঁর সম্পর্কে কত যে কিংবদন্তি ছড়িয়ে আছে, তা বলে শেষ করা যায় না। ধরা যাক প্রশ্নকর্তা শুরুই করলেন এমন — সাধক কবি, শাক্তপদাবলির কবি, চারণ কবি, প্রভাতী কবি, যৌবনের কবি, ভাঙা-গড়ার কবি, প্রেমিক কবি, গানের কবি ইত্যাদি, তা হলে কি এই খণ্ড খণ্ড বিশেষণগুলিকে জুড়ে কবির সর্বাধিক প্রচারিত ও প্রতিষ্ঠিত যে বিদ্রোহী রূপটি, তার অবয়বটিকে কি ধরা যাবে? প্রশ্নগুলো যেমন সহজ, উত্তর তো কমবেশি জানা সকলের। এই জানা উত্তরের পথেই প্রশ্নগুলোর দিকে আরও ধাবমান হওয়া যাক। শুরুতেই যদি ‘সাধক কবি' পরিচয়টি দেখা যায়, কেন সাধক বলা হবে- -এ প্রশ্ন আসে। এ খোঁজের উপর আলো ধরলে দু'-তিনটি উদাহরণ দেখে নেওয়া যেতে পারে। বঙ্গজীবনের সঙ্গে মিলেমিশে আছে যে-জীবনবোধ, যে-ধরণীর বুকে জননীর নানা রূপের অস্তিত্ব ধ্রুব ও মূর্ত হয়ে ওঠে বছরভর, তাকে তিনি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন। তার ফলস্বরূপ সর্বসাধারণের ভাবাদর্শকে একাধারে কবি ও সাধকরূপে তিনি হাজির করলেন তাঁর কাব্যে। এই সাধনভূমি বাংলাদেশের সাধকরা তেমনটিই করে থাকেন। লিখলেন '(মা) একলা ঘরে ডাকবো না আর/ দুয়ার বন্ধ করে।/ (তুই) সকল ছেলের মা যেখানে/ ডাকবো মা সেই ঘরে।' কিংবা মায়ের জন্য আকুল আকুতি জানিয়ে এ দেশের প্রকৃত ভাবধারায় জীবকে শিবজ্ঞান করে ছন্দে বাঁধলেন এমন পঙক্তি— ‘দীনের হতে দীন অধম যথা থাকে/ ভিখারিণী বেশে সেথা দেখেছি/ মোর মাকে।/ (মোর) অন্নপূর্ণা মাকে।/ অহঙ্কারের প্রদীপ নিয়ে স্বর্গে/ মাকে খুঁজে,/ (মা) ফেরেন ধূলির পথে/ যখন ঘটা করে পূজি।' বা যখন বাঁধেন 'কালো মায়ের পায়ের তলায় দেখে যারে আলোর নাচন।' প্রকৃত সত্যের সন্ধানে স্থির বিশ্বাসে অবিচলিত কবির এমন সত্ত্বাকে তো সাধক বলা যায়ই।
This story is from the 02 July, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the 02 July, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
অসুরক্ষিত এক চিকিৎসা ক্ষেত্র
স্বাস্থ্যব্যবস্থার বিকৃত ভাবনা এবং দর্শনের আকাশে নিশাচর হিসেবে চিকিৎসা মাফিয়াদের উদ্ভব এবং বিকাশ।
‘ধ্রুপদী’ হল বাংলা ভাষা এ
কটা সঙ্গত প্রশ্ন উঠতে পারে ধ্রুপদী ভাষার সংজ্ঞার্থ কী? এর কী আদৌ কোনও নির্দিষ্ট সংজ্ঞার্থ আছে?
ইজ্রায়েল-গাজা-প্যালেস্টাইন, ইরান ও সৌদি আরব, লেবানন—মধ্যপ্রাচ্যের অশান্তি ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে।
ইজরায়েলের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে এবং সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহে ভারত ইজরায়েলের কাছ থেকে সমর্থন পায়। তবে, ভারত প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকেও সমর্থন জানিয়ে এসেছে।
আমাদের রক্তকণিকারা আলোয় মাতে
কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গান শ্রোতাকে নিয়ে যায় অনন্তসাগরমাঝে, করুণ সুরে বাজতে থাকে চরণতলচুম্বিত পন্থবীণা।
উৎসবের অন্ধকার
সময় কখন কার হাত দিয়ে অলক্ষ্মী তাড়িয়ে লক্ষ্মীর আসন গড়ে দেয়, কেউ তা জানে না। শুধু আশা, শ্মশানের ছাইভস্ম — চেতনা, ভালবাসা, আদর্শ ও পারস্পরিক বিশ্বাসের সুধাধারায় ধুয়ে যাক। পশ্চিমবঙ্গবাসী শান্তি, স্বস্তি, নিরাপত্তা, শিক্ষা ও সমৃদ্ধি নিয়ে স্থিত হোক।
লক্ষ্মীশ্রী ও লক্ষ্মীনিবাস পাঁচালি
বাঙালিদের ব্যবসা করা নিয়ে আজ যতই ব্যঙ্গের তির ছুটে আসুক না কেন, বাঙালিরা সপ্তডিঙা নিয়ে ব্যবসা করতে বেরিয়ে পড়েছিল, বাংলার ইতিহাস-সাহিত্য, সেই প্রমাণ দিয়েছে একাধিকবার।
পান্থজন ও তাঁর সখা
নতুন পথের খোঁজে অক্লান্ত এই পথিক জীবনসায়াহ্নে পৌঁছেও পড়তে চাইছেন কবিতায় আধুনিকতার কম্পাস!
সিদ্ধার্থ জাতক
নিজে ঈশ্বর মানতেন না, কিন্তু মানুষ তাঁকেও ঈশ্বর বানিয়ে ছেড়েছে। তাঁর জন্মস্থল নিয়েও সীমানার এ পারে ও পারে রশি টানাটানি; ডলার-ইয়েন-এর মায়া বড় কম নয়।
দৃশ্য ও অনুভূতির রেখমালা
দর্শককে নিজের গভীর অভ্যন্তরের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয় বিড়লা একাডেমির এই প্রদর্শনী।
বিপ্লব, ব্যতিক্রম ও বাস্তব
তিনটি সাম্প্রতিক নাট্যালোচনা। তাতে এক্সপেরিমেন্টাল কাজ যেমন আছে, তেমনই আছে সাহিত্যনির্ভর গল্পও।