সত্যিই আমাদের এই উন্মুক্ত সমাজ ভারতীয় নাগরিক হিসেবে আমার এই আশি বছরের জীবনকে উপভোগ করার সুযোগ দিয়েছে। এখানে আমি পাহাড়ে এবং উপত্যকার চড়াই-উতরাইয়ে হেঁটে বেড়িয়েছি, ময়ূরের নাচ এবং হাতির পালকে দেখেছি, মাসুরের মোহনায় মৎস্যজীবী, শিরশির মশলা বাগানের মালিক, মণিপুরের পাহাড়ের গাংটে আদিবাসী এবং গাডচিরোলির অরণ্যনিবাসী গোন্দ উপজাতির মানুষদের সঙ্গে দিনযাপন করেছি, অথচ, এই পুরো সময়টাই আমি ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্সের প্রতিভাবান বিজ্ঞানীদের অংশ ছিলাম।
বিজ্ঞানসাধক মাধব গ্যাডগিলের জীবনের এক নিটোল সারসংক্ষেপ এটা হতেই পারত— সত্যি বলতে কী, এ বাক্যগুলো তিনি নিজেই তো লিখেছেন! যেন জীবনের উপান্তে পৌঁছে কেউ ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে দৈনন্দিন রুটির জন্য। কিন্তু গোল হল, এমন এক পরিপূর্ণ আত্মতৃপ্ত কণ্ঠস্বরে পাঠকের পক্ষে ভুল দিশায় চলে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। ভরসা এই যে, পঙ্ক্তিগুলো তার সামনে আসে একেবারে শেষ অধ্যায়ের গোড়ায়, আর ততক্ষণে পাঠকের বোঝা হয়ে গেছে মাধব গ্যাডগিলের তরোয়ালের ধার। ব্যুরোক্র্যাসির মূঢ়তা থেকে রাষ্ট্রশক্তি ও খনি-কলকারখানা মালিকের গাঁটছড়া, বন দফতরের ঔপনিবেশিক যুগের মানসিকতা থেকে কুম্ভীরাশ্রু ঝরানো শহুরে বন্যপ্রাণপ্রেমীর দল, কাউকে তিনি ছাড়েন না; প্রবাদপ্রতিম পক্ষিবিজ্ঞানী সলিম আলিকেও না। প্রায় ৬০০ পৃষ্ঠার এই আত্মজীবনীর মোটামুটি এক-তৃতীয়াংশ পেরিয়ে আসতে না আসতেই গ্যাডগিলকে দেখা যায় ডাইনে-বাঁয়ে মূর্তি ভাঙার যজ্ঞে। বহু মূর্তির একটি যেমন ১৯৭২-এর ভারতীয় বন্যপ্রাণী আইন। ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে রাজ্য ও রাষ্ট্রের নানা আসনে বসা সমস্ত যুগের প্রশাসকদের যে-চরিত্র তিনি উদ্ঘাটন করেছেন, তা গড় সত্য হিসেবে তেমন অচেনা হয়তো নয়, কিন্তু এখানে তা আসে সাক্ষীসাবদ সমেত।
পড়তে পড়তে কখনও মেঘনাদ সাহার কথা মনে আসবে, বিশেষ করে সরকারি-বেসরকারি নানা সমীক্ষা ও পরিকল্পনা দলের সদস্য হিসেবে কাজ করার প্রেক্ষিতে, ইস্পাতকঠিন মন্তব্যের প্রেক্ষিতেও। তবে মিলটা জে বি এস হলডেন-এর সঙ্গেই বেশি। এটা বোধহয় মাধব গ্যাডগিলএরও নজর এড়ায়নি, বইয়ের গোড়াতেই তিনি হলডেনের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, উল্লেখ করেছেন ওঁর এ দেশে আসা ঘিরে তাঁদের পরিবারের উত্তেজনা আর ঘটনাটার পিছনে তাঁর বাবা ধনঞ্জয় রামচন্দ্র গ্যাডগিলের ভূমিকা।
This story is from the September 02, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the September 02, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
অসুরক্ষিত এক চিকিৎসা ক্ষেত্র
স্বাস্থ্যব্যবস্থার বিকৃত ভাবনা এবং দর্শনের আকাশে নিশাচর হিসেবে চিকিৎসা মাফিয়াদের উদ্ভব এবং বিকাশ।
‘ধ্রুপদী’ হল বাংলা ভাষা এ
কটা সঙ্গত প্রশ্ন উঠতে পারে ধ্রুপদী ভাষার সংজ্ঞার্থ কী? এর কী আদৌ কোনও নির্দিষ্ট সংজ্ঞার্থ আছে?
ইজ্রায়েল-গাজা-প্যালেস্টাইন, ইরান ও সৌদি আরব, লেবানন—মধ্যপ্রাচ্যের অশান্তি ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে।
ইজরায়েলের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে এবং সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহে ভারত ইজরায়েলের কাছ থেকে সমর্থন পায়। তবে, ভারত প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকেও সমর্থন জানিয়ে এসেছে।
আমাদের রক্তকণিকারা আলোয় মাতে
কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গান শ্রোতাকে নিয়ে যায় অনন্তসাগরমাঝে, করুণ সুরে বাজতে থাকে চরণতলচুম্বিত পন্থবীণা।
উৎসবের অন্ধকার
সময় কখন কার হাত দিয়ে অলক্ষ্মী তাড়িয়ে লক্ষ্মীর আসন গড়ে দেয়, কেউ তা জানে না। শুধু আশা, শ্মশানের ছাইভস্ম — চেতনা, ভালবাসা, আদর্শ ও পারস্পরিক বিশ্বাসের সুধাধারায় ধুয়ে যাক। পশ্চিমবঙ্গবাসী শান্তি, স্বস্তি, নিরাপত্তা, শিক্ষা ও সমৃদ্ধি নিয়ে স্থিত হোক।
লক্ষ্মীশ্রী ও লক্ষ্মীনিবাস পাঁচালি
বাঙালিদের ব্যবসা করা নিয়ে আজ যতই ব্যঙ্গের তির ছুটে আসুক না কেন, বাঙালিরা সপ্তডিঙা নিয়ে ব্যবসা করতে বেরিয়ে পড়েছিল, বাংলার ইতিহাস-সাহিত্য, সেই প্রমাণ দিয়েছে একাধিকবার।
পান্থজন ও তাঁর সখা
নতুন পথের খোঁজে অক্লান্ত এই পথিক জীবনসায়াহ্নে পৌঁছেও পড়তে চাইছেন কবিতায় আধুনিকতার কম্পাস!
সিদ্ধার্থ জাতক
নিজে ঈশ্বর মানতেন না, কিন্তু মানুষ তাঁকেও ঈশ্বর বানিয়ে ছেড়েছে। তাঁর জন্মস্থল নিয়েও সীমানার এ পারে ও পারে রশি টানাটানি; ডলার-ইয়েন-এর মায়া বড় কম নয়।
দৃশ্য ও অনুভূতির রেখমালা
দর্শককে নিজের গভীর অভ্যন্তরের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয় বিড়লা একাডেমির এই প্রদর্শনী।
বিপ্লব, ব্যতিক্রম ও বাস্তব
তিনটি সাম্প্রতিক নাট্যালোচনা। তাতে এক্সপেরিমেন্টাল কাজ যেমন আছে, তেমনই আছে সাহিত্যনির্ভর গল্পও।