বিপ্লব, ব্যতিক্রম ও বাস্তব

তিনটি সাম্প্রতিক নাট্যালোচনা। তাতে এক্সপেরিমেন্টাল কাজ যেমন আছে, তেমনই আছে সাহিত্যনির্ভর গল্পও।

- সুব্রত ঘোষ

কথোপকথন টিম থিয়েটার ইন G-মাইনর নামের দলটি একেবারেই আনকোরা। দলের নামটি যেমন অভিনব, তাঁদের প্রথম নাট্যোপস্থাপনাটিও কিছুটা ব্যতিক্রমী একটি প্রয়াস। তাঁরা পূর্ণেন্দু পত্রীর সুবিখ্যাত 'কথোপকথন' উপন্যাসসম দীর্ঘ কবিতাটিকে অবলম্বন করে কথোপকথন নামেই একটি নাট্য তপন থিয়েটারের মঞ্চে নিয়ে এলেন। কাজটি যতটা এক্সপেরিমেন্টাল ততটাই চ্যালেঞ্জিং। দলটি সাধুবাদ পাবে তাঁদের এই সাহসী প্রচেষ্টার জন্য।

কবিতার নাট্যায়ন অভিনব না হলেও পূর্ণেন্দুর এই লেখনীটিকে নাট্যরূপে উপস্থিত করা এক স্পর্ধিত প্রচেষ্টা মনে হতে পারে, কারণ এই পাঁচ খণ্ডের প্রেমের কবিতাটি বাংলা কবিতা সাহিত্যেই হয়ে আছে এক ব্যত্যয়ী কাজ, তার গঠন, তার শব্দ চয়ন, তার অ্যালিগরি এবং তার ইমেজারি রচনার জন্য। 'একদা কলকাতা নামের এই শহর’-এর ‘শুভঙ্কর নামে ৪৫ বছর বয়সী এক সদ্যজাত যুবক' আর ‘নন্দিনী নামের এক বিদ্যুৎ-শিখা'-র ‘গেরিলা যুদ্ধের মতো তাদের গোপন ভালবাসাবাসির' এক দলিল রচনা হয়ে আছে এই কবিতায়। তাদের কথোপকথন, তাদের চিঠি এবং বন্ধু অমিতাভর সঙ্গে এক সংলাপ নিয়ে এই কবিতাটির থেকে অংশ বেছে নিয়ে, সেই সব অংশ আগেপিছু করে, নিবেদিতা ভট্টাচার্যর নাট্যরূপটি কিন্তু একটি নিটোল চেহারা পেয়েছে, কবির লেখার মূল সুর, তার গতিপথ, তার সামগ্রিক অভিঘাতকে বিঘ্ন না ঘটিয়ে। মূল রচনার ভাষাকেই কিছু সম্পাদনা করে সংলাপ হিসেবে রেখে নাটককার সাজিয়েছেন তাঁর নাটকটি। সময়কেও আগে পরে করে নিতে হয়েছে নাটকের স্বার্থে। এ কাজ সহজ নয়, তাই নিবেদিতার প্রশংসা প্রাপ্য।