একা বাঁচার লড়াই

‘চণ্ডালিকা’, ‘তাসের দেশ’, ‘চিত্রাঙ্গদা’য় অংশ নিয়ে ফিরে পান যৌবনের গানের দিনগুলো।

• শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম ছিল ছোট থেকেই। অনেক না পাওয়ার মধ্যে গান বাঁচিয়ে রেখেছিল মেয়েটিকে। সময়ে, অসময়ে গান গাইতে ভালো লাগত। সেই গানের টানেই মাধ্যমিক পাশ করার পর মুম্বই পাড়ি। সঙ্গী মা। আর ফিরে তাকাতে হয়নি। মুম্বইয়ের রেস্তোরাঁয় গান গেয়ে ভালোই উপার্জন হতো। দীর্ঘ ২৫ বছর বাণিজ্যনগরীতে মা, মেয়ের সংসারে সুখ দিয়ে যেত আরামের পরশ। তবে জীবন ফিরে তাকাতে বাধ্য করল মেয়েটিকে। মায়ের মৃত্যুতে একপ্রকার মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে মুম্বইয়ের রাস্তায় তখন তাঁর বাস। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাত ঘুরে ২০১২ নাগাদ কলকাতায় ‘ঈশ্বর সংকল্প’-এ আসেন তিনি। ভুলে যাওয়া অতীত ধীরে ধীরে তাঁর বর্তমানকে খুঁজে দেয়।ঝরনা সাহার নতুন এক জীবন শুরু হয় তিলোত্তমায়।

এক গ্রীষ্মদিনে ‘ঈশ্বর সংকল্প'র দোতলার ঘরে ঢুকেই ঝরনা নমস্কার করলেন। প্রাথমিক সম্ভাষণের পরই জড়তা কেটে গেল অনায়াসে। রান্নার কাজে এখন ব্যস্ত থাকেন ঝরনা। সেখান থেকে উপার্জনও হয়। ছোট, বড় সকলকে খাবার বেড়ে দেন মায়ের মতো করে। ‘মা' এই শব্দটাইঝরনার জীবন জুড়ে। মায়ের লড়াইয়ের প্রথম দিন থেকে তিনিই তো সঙ্গী। কারণ? ‘আমার ছোটবেলায় কলকাতায় কেটেছে। বাবা আমার জন্মের তিন মাস আগে দুর্ঘটনায় মারা যান। বাবা থাকাকালীন খিদিরপুরে বাড়ি ছিল আমাদের। বাবা মারা যাওয়ার পর বেহালায় মামারবাড়ির কাছাকাছি মা চলে আসে। আমি সেখানেই বড় হয়েছি। তারপর গানের জন্য মুম্বই যাই। ছোট থেকেই শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিখেছি।' একটানা বলে থামলেনঝরনা।