পালাসের বিড়ালের খোঁজে মোঙ্গোলিয়া

শহরে এসেও বার বার মনে পড়ে যাচ্ছে উদার, অসীম প্রান্তরে পেয়েছিলাম এক অপার স্বাধীনতার অনুভূতি আর প্রকৃতির সঙ্গে এক প্রত্যক্ষ সংযোগের বোধ।

- লেখা ও ছবি: মোহিত ঘটক

সিঙ্গাপুর থেকে হংকং হয়ে উলানবাটারে উড়ে এলাম পালাস' ক্যাট, কিছু শিকারি পাখি পাখি এবং করসাক শিয়ালের ছবি তুলব বলে। আমার ক্যাম্প উলানবাটার থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে। এর মধ্যে ৫০০ কিলোমিটার হাইওয়ে ধরে যাওয়া, আর শেষের ১০০ কিলোমিটার যাত্রাপথ মালভূমির মধ্য দিয়ে। উলানবাটারের ফ্লাওয়ার হোটেলে সেই রাতটা কাটল। পরদিন ভোরবেলাই ভোরবেলাই আমার পরিচিত মোঙ্গোল দম্পতি সপুত্র-সকন্যা চলে এলেন গাড়ি নিয়ে আমায় তুলে নিতে। এঁরা স্বামী-স্ত্রী স্তেপ ওয়াইল্ডলাইফ নামে একটি এনজিও চালান।

সময়টা এ বছরের জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ। মোঙ্গোলিয়ায় বর্ষাকাল। শহর থেকে একটু দূরে যেতেই গাড়ির জানলার বাইরে সম্পূর্ণ অন্য এক দৃশ্য ধরা দিল। রাস্তার দু'দিকে উন্মুক্ত মালভূমি তরঙ্গ তুলে দিগন্তে মিশে গিয়েছে। বৃষ্টিবাদল হওয়ায় ঝকঝকে সবুজ রং, কোথাও কোথাও ঘাসফুল, বুনো ফুল ফুটে আছে, চরে বেড়াচ্ছে ভেড়া, গোরু, ঘোড়ার পাল। মালভূমির কোথাও কোথাও সাদা রঙের তাঁবু খাটিয়েছে যাযাবর পরিবার। এমনিতেই মোঙ্গোলিয়া বিশ্বের সবচেয়ে কম জনবহুল সার্বভৌম দেশ। তার উপর এখনও এ দেশের ত্রিশ শতাংশের বেশি লোক যাযাবর জীবন যাপন করে। জল এবং গবাদি পশুর জন্য ঘাসজমির সন্ধানে জায়গা বদল করে বছরে দুই থেকে চার বার। পথ চলতে চলতেই চোখে পড়ে এদের জীবনযাত্রা। জেনারেটরের সীমিত বিদ্যুৎশক্তিতেই এরা কাজ চালিয়ে নেয়। প্রকৃতির খামখেয়ালের সঙ্গে মানিয়ে চলে।