লাসা ফিভার

বিস্ফোরণের অপেক্ষায় থাকা এক মহামারী নিয়ে লিখেছেন ডাঃ রুদ্রজিৎ পাল ও ডাঃ জ্যোতির্ময় পাল।

মি সে লরা ওয়াইন। শিকাগোয় | সারা জীবন কাজ করা এই নার্স অবসরের পর সমাজসেবার উদ্দেশে চাকরি নিলেন সুদূর নাইজেরিয়ায়। এটা ১৯৬৯ সালের কথা। সবেমাত্র গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়া নাইজেরিয়ায় তখন স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রায় ভঙ্গুর। আমেরিকা এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের সাহায্যেই চলছে স্বাস্থ্যবিভাগ। সেই সময়ে আমেরিকার ‘চার্চ অব দ্য ব্রিথরেন' নাইজেরিয়ার উত্তর পূর্বে লাসা নামে এক আধা গ্রাম আধা শহরে লাসা মিশন হাসপাতাল নামে এক হাসপাতাল চালাত। সেই মিশনারি হাসপাতালেই পাঠানো হল অবসরপ্রাপ্ত ওই অভিজ্ঞ নার্সকে। অবস্টেট্রিকস-এর প্রধান হিসাবে। এঁদের বলা হতো ‘সার্ভিং ইন মিশন' নার্স।

এইখানে কাজ করার সময়ে একদিন এই ৬৯ বর্ষীয় নার্সের জ্বর শুরু হল। আফ্রিকায় জ্বর হলে নিয়ম হল প্রথমেই ম্যালেরিয়া, ইয়েলো ফিভার ইত্যাদি ভাবতে হবে। যেমন এককালে কলকাতায় জ্বর হলেই কুইনিন খাওয়ানো হতো। সেইরকম লরা ওয়াইনকেও প্রথমে নানা চিকিৎসা করা হল স্থানীয় পরিচিত অসুখের কথা ভেবে। কিন্তু জ্বর আর কমে না। 

রোগীর অবস্থা খারাপ হচ্ছে দেখে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উড়িয়ে আনা হল ৩০০ মাইল দূরে জস শহরে। এখানে ভালো হাসপাতাল আছে। কিন্তু বহু চেষ্টার পরেও লাভ কিছু হল না। কিছুদিনের মধ্যেই ওয়াইন-এর মৃত্যু হল দারুণ কষ্ট পেয়ে। যেহেতু এই নার্স ছিলেন আমেরিকার নাগরিক, তাই তাঁর দেহরসের নমুনা আমেরিকায় পাঠানো হল। কিন্তু কাহিনির এখানেই শেষ নয়। এ তো সবে গৌরচন্দ্রিকা!