মেয়েদের স্বাস্থ্য: আর কবে ভাববে সমাজ!

নাবালিকা বিবাহ, প্রসূতি মৃত্যু— দু’টি সামাজিক সমস্যা আর হয়তো আগের মতো নেই। তবু একেবারে দূর হচ্ছে না কেন? প্রশ্ন তুলেছেন সফিউন্নিসা।

স “দ্য সমাপ্ত শারদোৎসবের রেশ এখনও জড়িয়ে রয়েছে | আকাশে, বাতাসে, মানুষের মনে। সামনে অপেক্ষায় আছে আরও কয়েকটি আনন্দোৎসব। গোটা অক্টোবর মাস জুড়ে উৎসবের আবহ। বাঙালি চেটেপুটে প্রতিটি আনন্দের কণা উপভোগ করে। সারা বছর অপেক্ষায় থাকে এই পর্বটির জন্য।

এই সময়ে নারীজগতের কিছু বাস্তব দিক মনে করিয়ে দেওয়া কতটা বাস্তবসম্মত কাজ হবে, তা নিয়ে সংশয় থাকলেও এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। কেননা মেয়েদের স্বাস্থ্য ও অন্যান্য কিছু দিক যে আজও চরম উপেক্ষার শিকার, তা বলাই বাহুল্য। সম্প্রতি রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তর থেকে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে জানা গিয়েছে, সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে সদ্য মা হওয়ার পরে প্রসূতিমৃত্যুর হার দেশের সামগ্রিক হারের চাইতে এই রাজ্যে বেশি। কয়েক মাস আগে কেন্দ্রীয় সরকারের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০১৬-২০১৮ সালে গোটা দেশে ১ লক্ষ প্রসবে মাতৃমৃত্যুর হার বা এমএমআর (ম্যাটারনাল মর্টালিটি রেশিও) ছিল ১১৩। ২০১৭-২০১৯-এর রিপোর্টে সেই হার কমে হয়েছে ১০৩। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এই এমএমআর এসেছে ১০৯। এই রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর সচেতন হয়েছে এবং বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণের রূপরেখা তৈরি করেছে।

রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাভাবিকভাবে সন্তানের জন্মদান ও সিজারিয়ান দুই ক্ষেত্রেই মায়েদের মৃত্যুর কারণ অন্যতম কারণ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও উচ্চ রক্তচাপ। সেইসঙ্গে সেপটিসেমিয়ার কারণ তো আছেই কিছু ক্ষেত্রে। সরকারি তরফে হবু মায়েদের জন্য নানাবিধ ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও কেন এমন ছবি? বাস্তবে কি সব সুবিধা মেয়েদের কাছে পৌঁছয়?

পরিবারেও কি ঠিকমতো যত্ন পান তাঁরা? যে ধরনের চাপের মধ্যে দিয়ে প্রান্তিক সমাজের মেয়েরা দিন কাটায়–স্বল্পাহার, লাগামহীন পরিশ্রম, বিশ্রাম ও যথাযথ যত্ন না পাওয়া, এগুলি বাস্তব পরিস্থিতির কিছু কারণ তো বটেই। দরিদ্র পরিবারগুলি অনেক সময়ই পয়সার অভাবে সময়মতো দরকারি চেক আপগুলিও করাতে পারে না।