ছেলেকে স্বাবলম্বী করে তোলাই আমাদের জয়!’

অটিস্টিক শিশুকে বড় করে সমাজের বুকে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার লড়াই চালান বহু অভিভাবক। সমাজের সব দুস্তর পারাবার পেরিয়ে সেই চেষ্টা ও নিষ্ঠার কথাই উঠে এল এক পিতার কলমে। জানাচ্ছেন সিদ্ধার্থ সেনগুপ্ত।

- সিদ্ধার্থ সেনগুপ্ত।

ঋক (নাম পরিবর্তিত) আমার ছেলে। ওর বয়স ৯। আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই যে ঋকের মতো একজনকে আমার সন্তান হিসেবে পেয়েছি। ও আমাদের সম্পদ।

পেশাসূত্রে আমি ও আমার স্ত্রী চেন্নাইয়ে থাকি। ২০১৫-র ডিসেম্বরে এখানে প্রবল বন্যা হয়। ওই সময় একটি ঘরে আমরা প্রায় ৩-৪ দিন বন্দি ছিলাম। জল-খাবার কিছু নেই। সেই সময় আমি বাধ্য হই বন্যাকবলিত অঞ্চল থেকে আমার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে অন্যত্র সরে যেতে। এই স্থানান্তরের সময় প্রবল ঝাঁকুনি লাগে আমার স্ত্রীর, সঙ্গে মানসিক উদ্বেগ, ভয়, স্ট্রেস তো ছিলই। যদিও সঙ্গে সঙ্গেই আমরা সবরকম পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় স্ক্যান করি। তাতে সবই স্বাভাবিকই ছিল। ২০১৬-য় ঋকের জন্ম হল।

প্রথমে সবই ঠিক ছিল। কিন্তু খটকা লাগল যখন ওর তিন-চার মাস বয়স। দেখলাম, তখনও ওর ঘাড় শক্ত হয়নি। এর সঙ্গেই ওর চোখের মণি ক্রমাগত এদিক ওদিক হতো। তা নিয়েও চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে আমরা যাই। যদিও তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেন যে চোখের এই সমস্যা ধীরে ধীরে কমে যাবে। হলও তাই। চোখের সমস্যা ঠিক হয়ে গেল। আমরাও হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। কিন্তু ও যত বড় হতে থাকল, আমরা দেখলাম, বেড়ে ওঠার সব মাইলস্টোনগুলো ছুঁতেই ওর একটু দেরি হচ্ছে। চিকিৎসক বললেন, ওর ডেভেলপমেন্টাল ডিলে আছে। কথা বলার ক্ষেত্রেও তাই। ঋক শব্দ তৈরি করতে পারলেও একটি গোটা বাক্য বলতে পারত না। একদিকে মাথা কাত করে দেখত! বুঝলাম, শুধু ডেভেলপমেন্টাল ডিলেই নয়, এ অন্য অসুখের ইঙ্গিত! আমাদের এক অন্য লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।