মধুকবির শেষ শয্যায় মাথা নত করে প্রণাম করার পর চোখে পড়ল সামনে তাঁর আবক্ষ মূর্তি। মূর্তির নীচে তাঁর স্বরচিত এপিটাফ ‘দাঁড়াও, পথিক-বর, জন্ম যদি তব/ বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল! এ সমাধিস্থলে/ (জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি/ বিরাম) মহীর পদে মহানিদ্রাবৃত/ দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন!...’
কবির মৃত্যুকালে এই আবক্ষ মূর্তি, এপিটাফ কিছুই ছিল না। পরে তাঁর কয়েকজন বন্ধুর উদ্যোগে এটি স্থাপিত হয়। মধুসূদন চিরকালই বিদ্রোহী, বেপরোয়া। রামচন্দ্র তাঁর কাছে নায়ক নন, রাবণই তাঁর ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-র নায়ক। জীবনের পরিচিত ছন্দ থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন তিনি। তাই তো বাবা রাজনারায়ণের সামনে ধূমপান, মদ্যপান করতেও দ্বিধা বোধ করতেন না। বাবার পছন্দ করা মেয়েকে বিয়ে করার ক্ষেত্রেও প্রবল আপত্তি তোলেন। মধুসূদনের মতে, কোর্টশিপ ছাড়া একজন অচেনা-অজানা মেয়ের সঙ্গে কীভাবে সারা জীবন অতিবাহিত করা যায়? অতএব বাবার পছন্দ করা মেয়ের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে কোনওভাবেই রাজি হননি। এমনকী বিবাহপূর্ব থেকে বাঁচতে রাতারাতি ধর্ম বদলে মাত্র ১৯ বছর বয়সে হয়ে গেলেন খ্রিস্টান!
তবে এই ঘটনা নিয়ে মতদ্বৈত রয়েছে। মধুসূদনের জীবনীকারদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন যে রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়ে দেবকীর প্রতি তাঁর গোপন মুগ্ধতা ছিল। তাই দেবকীকে লাভ করার বাসনায় তিনি খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেন। যাইহোক, এর পরবর্তী ফল মোটেও সুখকর হয়নি তাঁর জীবনে। বেশিরভাগ আত্মীয়, বন্ধু তাঁকে ত্যাগ করেন, নিজের বাবা-মাকেও হারান তিনি।
এদিকে হিন্দু কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হলে তাঁর নতুন ঠিকানা হল ফোর্ট উইলিয়াম। মাইকেল এরপর পড়াশোনা করতে গেলেন বিশপ’স কলেজে।
এখানেই তিনি পেলেন গ্রিক আর লাতিনের স্বাদ। শিক্ষাগ্রহণ শেষ করার পর যখন চরম অর্থকষ্টে তিনি পীড়িত, তখন ভাগ্যান্বেষণের জন্য কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে মাদ্রাজে পাড়ি জমান মধুকবি। অনেক চেষ্টার পর একটি স্কুলে ইংরেজি শিক্ষকের পদে চাকরিও পান তিনি। আর সেই সঙ্গে প্রেমে পড়েন রেবেকা ম্যাকটিভিস নামে এক যুবতীর। মাদ্রাজে তিনি ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কাটিয়েছিলেন। এবং ১৮৪৮ সালের জুলাইয়ের শেষে এই অ্যাংলো ইন্ডিয়ান কন্যার সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। তাঁর থেকে বছর ছয়েকের ছোট এই তরুণী মধুসূদনের স্কুলেরই ছাত্রী ছিলেন।
This story is from the {{IssueName}} edition of {{MagazineName}}.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the {{IssueName}} edition of {{MagazineName}}.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
‘উত্তমকুমার দুঃখে কেঁদে ফেলেছিলেন’
মহানায়ক ছিলেন তাঁর বিয়ের বরকর্তা। তাছাড়াও বিভিন্ন ছবিতে নায়ক নায়িকার ভূমিকাতেও দেখা গিয়েছে তাঁদের। তাই তিনি খুবই কাছ থেকে দেখেছেন উত্তমকুমারকে। মজা করতেন, খেপাতেন তবু মহানায়ক কখনও রুষ্ট হননি তাঁর আচরণে। উত্তমকুমারকে নিয়ে নানা ব্যক্তিগত ঘটনার কথা জানালেন মাধবী মুখোপাধ্যায়।
‘প্রতিভাকে ঘষেমেজে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতেন উত্তমদা’
মহানায়কের সঙ্গে তাঁর অভিনীত বহু ছবি দর্শকমনে প্রবল দাগ কেটেছে। সমালোচকরা বলেন, তাঁর মতো অভিনেত্রী সে যুগে আর কেউ ছিল না। স্বয়ং উত্তমকুমারও তাঁকে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বলে স্বীকার করতেন। মহানায়কের প্রসঙ্গ উঠলেই আজও নস্টালজিক হয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খোলেন উত্তমকুমারের প্রিয় ‘সাবু’ ওরফে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়।
আমার উত্তমদা
মহানায়ক তাঁকে ভীষণ স্নেহ করতেন। ভাইয়ের মতো দেখতেন। শাসন ও করতেন অভিভাবকের মতোই। প্রথম সাক্ষাতে তবু উত্তমকুমারের সঙ্গে কথা বলার সাহস হয়নি তাঁর। পরবর্তীতে একসঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে মহানায়কের স্নেহচ্ছায়ায় এসে সমৃদ্ধ হয়েছেন। মহানায়কের জন্মমাসে তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানালেন মিঠুন চক্রবর্তী।
‘একজন বড় মনের মানুষ '
উত্তমকুমারকে ঘিরে তাঁর স্মৃতির অন্ত নেই। মহানায়কের স্নেহ না পেলে নাকি নিজের ফিল্মি কেরিয়ারই গড়ে তোলা হতো না তাঁর। এছাড়া উত্তমকুমারকে নিয়ে পারিবারিক বিভিন্ন গল্পও রয়েছে তাঁর সংগ্রহে। সেইসব কথাই জানালেন বিশ্বজিৎ।
‘গানটা ভীষণ ভালো বুঝতেন '
উত্তমকুমারের নিজের গাওয়া গান পরে রেকর্ড করার সুযোগ পান তিনি। তাঁর পছন্দের সারিতে ‘হিরো' হিসেবে উত্তম-ই সেরা। রেকর্ডিং স্টুডিওয় তাঁর গান শুনে খুব খুশি হয়েছিলেন মহানায়ক। ‘ধন্যি মেয়ে'-র গানের মাঝে সংলাপ কীভাবে বলবেন, তাও হাতেকলমে তাঁকে শিখিয়ে দিয়েছিলেন উত্তম। প্রিয় নায়কের জন্মদিনে স্মৃতিতর্পণে গায়িকা আরতি মুখোপাধ্যায়।
বাংলা ছবির সর্বকালের শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক নায়ক
উত্তমকুমারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল সন্তানতুল্য। মেকআপ রুমের আলাপ-আলোচনা থেকে ব্যক্তিগত স্তরে কথাবার্তা সবই হতো তাঁর সঙ্গে। আজও প্রেমের নায়ক বললে ‘উত্তমকাকু’-তেই ভোট পড়ে তাঁর। মহানায়কের স্মৃতিতে অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়।
‘দাদার ওই বউঠান ডাকটা আজও আমার কানে বাজে’
উত্তমকুমারের সঙ্গে ছবি করতে গিয়ে তাঁর নতুন নামকরণ হয়েছিল ‘বউঠান’। কাজের সূত্রে খুবই কাছ থেকে দেখেছেন মহানায়ককে। প্রতিভাময়, মানবদরদি, হাসিমুখের মানুষটি আজ যে আর নেই, বিশ্বাস হয় না তাঁর। স্মৃতিচারণায় লিলি চক্রবর্তী।
মহানায়ক আজও কেন অনন্য?
উত্তমকুমার এবং সুচিত্রা সেন। পরদার এই জুটিকে নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই আজও। তাঁদের সম্পর্কটা কীভাবে দেখতেন সুপ্রিয়া দেবী? মহানায়কের অন্য সব নায়িকা যেমন শর্মিলা ঠাকুর, তনুজা, অপর্ণা সেনই বা কী বলেন উত্তমকুমারকে নিয়ে? লিখেছেন সুমন গুপ্ত।
‘যত দিন যাচ্ছে বুঝতে পারছি, কী হারালাম
মহানায়ক ছিলেন তাঁদের শ্বশুরমশাই। পারিবারিক বৃত্তের বাইরে ‘বাবি’কে নিয়ে খুব কম কথা বলেন তাঁরা, অর্থাৎ উত্তমকুমারের দুই পুত্রবধূ সুমনা চ্যাটার্জি এবং মহুয়া চ্যাটার্জি। ভবানীপুরের বাড়ির একতলার ঘরে বসে এক ফুরিয়ে আসা বিকেলে স্মৃতির ঝাঁপি মেলে ধরলেন দুই পুত্রবধূ। যে বাড়ির দেওয়াল, ছাদ, কড়িবরগা আজও উত্তমময়।
'জ্যাজান ছিলেন বটগাছের মতো'
মহানায়ক তাঁদের জ্যাঠামশাই। শ্রদ্ধার, আবদারের, ভালোবাসার ‘জ্যাজান’। চ্যাটার্জি পরিবারের বটবৃক্ষ উত্তমকুমারকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করলেন তাঁর দুই ভাইঝি— বরুণকুমারের কন্যা মৌসুমী দত্ত এবং তরুণকুমারের কন্যা মনামী বন্দ্যোপাধ্যায়।