‘কেঁদো বাঘ হেঁকে বলে: “ডিসিপ্লিন দরকার/ জঙ্গল মহলেতে চাই স্থায়ী সরকার।/ অরণ্য রাজ্যের জানোয়ার বংশ/ অরাজকতার দোষে হয় বুঝি ধ্বংস।/ অতএব বাঁচিবার থাকে সাধ যদি হে/ ভোটাইয়া দেহ মোরে শাসনের গদিতে।”/ হোলো ভোট, কেঁদো বাঘ পেলো রাজতত/ নেকড়ে খাটাস আদি জুটে গেল ভক্ত;/ দিনে দিনে ছাগ মৃগ মহিষ সমস্ত / রাজন্য গোষ্ঠীর হোলো উদরস্থ!/ ফের কভু হবে ভোট?... নাই হেন ভরসা;/ বছর না ঘুরিতেই অরণ্য ফর্সা।/ কেঁদো বাঘ হেসে বলে: “এই ছিল দরকার/ ভরিতে নিজের পেট চাই স্থায়ী সরকার।”””
দেশ-কাল নির্বিশেষে কুক্কুট ভট্টের এই ছড়াটি খুবই প্রাসঙ্গিক। সকলে এটিকে দ্বিধাহীন ভাবে সমর্থন করবেন এমনটা না-ও হতে পারে। না হওয়াটাই স্বাভাবিক। ছড়াটি একটা বিতর্কের প্রস্তাবনাও বটে। যুক্তিপ্রতিযুক্তি তাই চলতেই পারে। একদল হয়তো বলবেন, দীর্ঘমেয়াদি কাজের ক্ষেত্রে স্থায়ী সরকার খুবই প্রয়োজন। সময় না পেলে সরকার কাজ করবে কী ভাবে! সমাজের সর্ববিধ কল্যাণের জন্য জনগণের তাই উচিত স্থায়ী সরকারের প্রতি অটল আস্থা। অন্য দল হয়তো বলবে, বদলটা জরুরি। সরকার তাতে চাপে থাকে, কাজ ভাল হয়। একটা প্রতিযোগিতামূলক প্রবণতা তৈরি হয়। অল্প সময়ের মধ্যে প্রচুর কাজ করার প্রয়াস থাকে। নতুবা স্বৈরতন্ত্র ভর করে। বেরিয়ে আসে অতি আত্মবিশ্বাসের ফাঁপা অহঙ্কার— হিংস্র দাঁত-নখ। এ কথা ইতিহাস বলে। এ কথা বলে গণতান্ত্রিক অভিজ্ঞতা। এ ভাবে যুক্তিজাল নানা দিক থেকে বহুধা বিস্তৃত হতে পারে। সীমাহীন সে তর্কের অবতারণা। তবে বাস্তব রূপায়ণই শেষ কথা বলে।তখন বোঝা যায় আসল সত্যিটা কী। বাংলাদেশে সম্প্রতি যা ঘটল, তা দ্বিতীয় মতের ক্ষুব্ধ ও চরম বহিঃপ্রকাশ। রূপকথার রাক্ষসের গলা কেটে ফেললে প্রতিটি রক্তের ফোঁটা থেকে জন্মায় এক-একটি রাক্ষস। প্রতিটি রক্তের ফোঁটা সম্ভাবনা-বীজ। বন্ধ কৌটোয় তখন সযতনে রাখা থাকে প্রাণভোমরা। রূপকথা ভুলে গেলে চলে! তাই আন্দোলনের আপাত সাফল্যে নিশ্চিন্তে বসে থাকা যায়। না। যে-ছাত্রসমাজের হাত ধরে আকস্মিক ও নাটকীয়ভাবে একটি দেশের রাজনৈতিক পালাবদল ঘটে গেল, সে ছাত্রসমাজের দায়িত্ব বাড়ল। সময় ও পরিস্থিতি তাদের আরও পরিণত করবে, এটাই ভরসা।
This story is from the August 17, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the August 17, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
সন্দেহ প্রশাসককেই
গণক্ষোভের মূলে আছে এই ধারণা যে, সরকার তড়িঘড়ি কিছু একটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
এত বিদ্রোহ কখনও দেখেনি কেউ
এ দেখা সহজে ভোলার নয়। আগুন ছাইচাপা থাকে, কিন্তু জ্বলে ওঠার কারণ অপসারিত না-হলে তা নিঃশেষে নেভে না—ইতিহাস সাক্ষী।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা
তাই আজ বলতে হবে, গ্রাম থেকে নগর পর্যন্ত, প্রতিটি মানুষের জন্য স্বাস্থ্য-প্রযত্নের ব্যবস্থার দাবি হোক আন্দোলনের অভিমুখ।
নজরদারি-খবরদারি-ফাঁসির দাবি পেরিয়ে
যে-মেয়েটি গাড়ি চালান, তাঁর শেষ প্যাসেঞ্জার নামিয়ে বাড়ি ফিরতে রাত দুটো বাজলে বা যে-মেয়েটি খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেন, তাঁকে কি বলা হবে যে, রাতে আপনি কাজ করলে প্রশাসন আপনাকে সুরক্ষা দেবে না?
অন্ধকার রাতের দখল
তালিকা আরও প্রলম্বিত হয়ে চলবে, যাঁদের কেউ কর্মক্ষেত্রে অত্যাচারিতা হননি। তাঁদের নিরাপত্তার কী ব্যবস্থা হবে?
বিচার, বিবেক এবং রাষ্ট্র
সমষ্টি যেখানে সৎ বুদ্ধিসম্পন্ন, কয়েকজন মানুষরূপী অমানুষের জন্য আমরা কি আবার আমাদের কষ্টার্জিত সভ্যতা ভেঙেচুরে অসভ্যে পরিণত হব? নাকি আস্থা রাখব রাষ্ট্রের ওপর? এ ছাড়া আর কি কোনও দ্বিতীয় পন্থা আছে?
এবার সরাসরি বাক্যালাপ হোক
এই রাজ্যের যাঁরা উপদেষ্টা, তাঁরা হাওয়ায় পা দিয়ে চলেন। নারীর অধিকার, নারীর বিচরণের ক্ষেত্র, নারীর সম্মান ও নিরাপত্তা এগুলো সম্বন্ধে তাঁরা ওয়াকিবহাল নন, তাঁরা অনাধুনিক। মানুষ কী চাইছে, পশ্চিমবঙ্গবাসীর প্রয়োজনগুলি কী, মেয়েদের দরকারগুলি কী—এসব নিয়ে তাঁরা ভাবিত নন।
পারাবারে সংসার
দূর মহাদেশের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে দেয় জাহাজ, কিন্তু সেটি নিজেই এক ভাসমান মহাদেশ। সেখানে সংসার গড়ে তোলার অভিজ্ঞতাও যেন এক গল্প।
পারম্পরিক প্রবাহের সুনির্মিত প্রয়াস
ভবানীপুর বৈকালী অ্যাসোসিয়েশনের এই প্রয়াস ‘অজানা খনির নূতন মণি'-র আবিষ্কারের মতো ভাল লাগার আবেশ সৃষ্টি করে।
শমীবৃক্ষের নীচে
আলোচ্য বইয়ের পুরোটা জুড়েই লেখক মাধব গ্যাডগিল উপযুক্ত বারুদ ছড়িয়ে রেখেছেন।