সন্দেহ প্রশাসককেই
Desh|September 02, 2024
গণক্ষোভের মূলে আছে এই ধারণা যে, সরকার তড়িঘড়ি কিছু একটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
তাপস সিংহ
সন্দেহ প্রশাসককেই

আকাশ-বাতাস মথিত করে সহস্র কণ্ঠে চারিদিকে শুধু একটাই শব্দ ধ্বনিত হচ্ছে: ‘জাস্টিস! উই ওয়ান্ট 'জাস্টিস!'

রাজপথে ঝড় তোলা অজস্র পায়ের নাগরিক পদধ্বনি জানিয়ে দিচ্ছে, এ নিছক ক্ষণস্থায়ী আবেগ নয়। তারা বিচার চায়। আরজি কর হাসপাতালে যে-নারী তাঁর কর্মক্ষেত্রে খুন ও ধর্ষিতা হলেন, সেই নারী বেশ কিছু দিনই আমাদের সকলের ঘরের মেয়ে হয়ে গিয়েছেন। নাগরিক সমাজ জানিয়ে দিয়েছে, ওই চিকিৎসকের সঙ্গে যা যা হয়েছে, তা যে-কোনও পরিবারের যে-কোনও নারীর সঙ্গে হতে পারত। তাই এই বিচারের দাবি।

নাগরিক সমাজের এই চাওয়া প্রকৃতপক্ষে অত্যন্ত ন্যায্য, সঙ্গত ও যুক্তিপূর্ণ। চতুর্দিকে ক্ষোভের বিস্ফোরণের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কিন্তু সেই ক্ষোভ প্রশমনে পুলিশপ্রশাসনের ভূমিকা কি আদৌ সংবেদনশীল? ভারতের মতো কল্যাণকামী একটি রাষ্ট্রে নারীদের জীবন বারে বারে বিপন্ন হয়ে পড়ে কেন? কেনই-বা বারংবার অভিযোগ ওঠে সংবেদনশীলতার অভাবের?

শুধু এই কলকাতা, এই বঙ্গদেশেই নয়, গণআন্দোলনের আবেগ আছড়ে পড়েছে ভারতের বাইরেও। কিন্তু সেখানকার মানুষ এই রাজ্যে কী দেখছে? দেখছে, যাঁকে ঘিরে অভিযোগের পাহাড় জমেছে, মহিলা চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের ঘটনার পরে যাঁর নানা কার্যকলাপ নানাবিধ প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, এমনকি কয়েক বছর আগে থেকেই যাঁর বিরুদ্ধে ভূরিভূরি দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়েছে স্বাস্থ্যভবন সমেত বিভিন্ন মহলে, আরজি কর হাসপাতালের সেই সুপার সন্দীপ ঘোষ ‘ইস্তফা’ দেওয়ার ঘণ্টা চারেকের মধ্যেই তাঁকে কলকাতার আর-একটি হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদে বসিয়ে দেওয়া হয়! নির্যাতিতার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সন্দীপবাবুর পাশেই দাঁড়ালেন!

তখনও কলকাতা হাই কোর্টে এই মামলা ওঠেনি। তার আগেই মুখ্যমন্ত্রী বললেন, এই মামলার তদন্ত সিবিআই করলে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। কারণ, তাঁদের কোনও কিছু লুকোনোর নেই। তার পরে অবশ্য প্রথম দিনের শুনানিতেই কলকাতা হাইকোর্ট এই ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয়। সুপ্রিম কোর্ট যে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে, সেই মামলার প্রথম শুনানির দিনেই রাজ্যকে কার্যত কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের অজস্র প্রশ্নবাণের কোনও সদুত্তর মেলেনি এখনও।

This story is from the September 02, 2024 edition of Desh.

Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.

This story is from the September 02, 2024 edition of Desh.

Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.

MORE STORIES FROM DESHView All
কবিতার খাতা
Desh

কবিতার খাতা

দিন শেষ হয়ে যায়। অন্ধকার নেমে আসে আকাশ থেকে। কিন্তু রোজকার মতো ঝলমলিয়ে ওঠে না তাঁর পাড়া। দোকান-বাজার। শব্দ ওঠে জেনারেটরের। বড় বড় আলো পড়ে ধ্বংসস্তূপের ওপর। যেন সেটাই মঞ্চ।

time-read
8 mins  |
January 02, 2025
কলের গাড়ি
Desh

কলের গাড়ি

এক দিন আবিষ্কার হল অগ্ন্যাশয়ে বাসা বেঁধেছে কর্কট ব্যাধি, অন্তিম পর্যায়। পারিবারিক আবহাওয়ায় দ্রুত পরিবর্তন দেখা দিল। রোগশয্যায় শুয়ে সবই টের পায় শান্তিলাল। এক দিন হীরালাল সামনে এসে দাঁড়ায়।

time-read
10+ mins  |
January 02, 2025
উপেনবাবুর মেয়ে
Desh

উপেনবাবুর মেয়ে

গোকুলপিঠে খেতে খেতে ছেলেবেলার স্মৃতি জাগিয়ে তোলে, যখন শীতের সকালে মায়ের হাতে বানানো গরম গরম পিঠে ছিল সবচেয়ে বড় সুখ।

time-read
10 mins  |
January 02, 2025
ভালবাসার গল্প
Desh

ভালবাসার গল্প

বাদামি চুলের এলা কাঁদছিল। কিন্তু অমল যেন দেখতে পাচ্ছিল বাসবকাকার মুখ। দেখতে পাচ্ছিল আবছায়া একটা ঘর। আর তার মধ্যে ছোট্ট একটা পুঁটলির মতো পড়ে আছে ওর অসহায় বাবা।

time-read
9 mins  |
January 02, 2025
তিনি নক্ষত্র হতে জানতেন
Desh

তিনি নক্ষত্র হতে জানতেন

জাকির হুসেন, তবলার অতুলনীয় জাদুকর, যাঁর স্পর্শে তবলা খুঁজে পেয়েছিল নতুন ভাষা। তাঁর প্রতিভা ও ক্যারিশমা আজও সঙ্গীতজগতে এক আলোকবর্তিকা।

time-read
4 mins  |
January 02, 2025
সুখলালের কিস্সা
Desh

সুখলালের কিস্সা

সন্ধের ভিজিটিং আওয়ারে সুখলাল দেখেছিল, ফিমেল ওয়ার্ডের আঠাশ নম্বর বেডে সাদা কাপড়ে ঢাকা একটা দেহ। মন মানতে চাইছিল না। এখনও বারবার মনে হয়, ফুলমণি বলেছিল, আজ কোথাও যেয়ো না।

time-read
10+ mins  |
January 02, 2025
১৯৬৪
Desh

১৯৬৪

শৈশবের সেই যাত্রার মধ্যে মধ্যে মিশে ছিল রোমাঞ্চ; গোয়ালন্দে গাদার মাছের কাঁটা গলায় বিঁধে যাওয়ার পর দলা করে মাখা শুকনো ভাত মুখে পুরে গিলে দেওয়ার ভিতর থেকেও আনন্দই জেগে উঠেছিল সেবার।

time-read
10 mins  |
January 02, 2025
রক্ষক
Desh

রক্ষক

আরিয়ানাকে নিয়ে চলে গেছে লুকাস। একা বসে আছে রাফায়েল। ভাবছে, আজ যদি ওর নিজের সন্তান বেঁচে থাকত, তবে তো কুড়ি বছর বয়স হত তার। সে হয়তো কোনও ইউনিভার্সিটিতে আন্ডার গ্র্যাড করত এখন।

time-read
10+ mins  |
January 02, 2025
ফুলের তোড়া
Desh

ফুলের তোড়া

বাবুই মায়ের দিকে বিষণ্ণ চোখে তাকিয়ে বলল, “মা, তুমি তো রোজ দুটো খবরের কাগজ আদ্যোপান্ত পড়ো। বাবা সারা বিশ্বের খবর রাখে। একটি মেয়ে রাজনীতি করছে, এ কি খুবই বিস্ময়কর?”

time-read
9 mins  |
January 02, 2025
সমাজের শিকড়ে
Desh

সমাজের শিকড়ে

মানুষ যে ভাবে ৯ অগস্টের পর একটা সমাজে সন্নিবিষ্ট হতে পেরেছিল, তার পিছনে ছিল হৃদয়ের জোরালো টান।

time-read
5 mins  |
January 02, 2025