দূরে থাক কোলাইটিস ও আইবিএস

এই অসুখে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খুব একটা সহ্য হয় না রোগীর। দুধে থাকা ল্যাকটোজেন থেকেই পেটের সমস্যা হয়।

- লিখেছেন মনীষা মুখোপাধ্যায়

পেট, তোর জন্য মাথা হেঁট'! পথচলতি লরির পিছনে লেখাটা দেখে প্রথমে হাসি পেল। পরে ভেবে দেখলাম, এই লেখার মর্মার্থ বাঙালির কাছে কতখানি ! পেটের জন্যই বাঙালির যত ভোগান্তি। সকালে উঠে নাকেমুখে গুঁজে ব্যবসা বা অফিসে ছুট, মানসম্মানের পরোয়া না করেই মাথার ঘাম পায়ে ফেলা— সবই নিজের ও পরিবারের পেট চালানোর তাগিদে। আবার পেট চালাতে গিয়ে একটু নিয়মের বাইরে বেরিয়ে গুরুপাক দিয়ে ফেললেই জবাব দিয়েছে পেট! তেল রগরগে কালিয়া, মুচমুচে ভাজাভুজির স্বাদকে বাঙালি যতই ডায়েট উড়িয়ে আপন করে নিয়েছে, ততই পেটের নানা অসুখ, রোগভোগ ঘিরে ধরেছে তাকে। সকালের গ্যাসের বড়ি হয়ে উঠেছে দিনের প্রথম বন্ধু! গ্যাস-অম্বল, অজীর্ণ, চোঁয়া ঢেকুর তো সঙ্গী ছিলই। সঙ্গে বেশ কয়েক দশক ধরে এদের দোসর হয়ে বাঙালিকে ভুগিয়ে চলেছে আইবিএস ও কোলাইটিস।

কোলাইটিস কেন হয়? বৃহদন্ত্র বা লার্জ ইন্টেসটাইনের যে কোনও ইনফেকশন বা সংক্রমণ থেকে কোলাইটিস হয়। বিশেষ করে বাঁদিকের কোলন বেশি সংক্রমণের শিকার হয়। ব্যাকটেরিয়া ছাড়াও জল বা অন্য পরজীবী থেকে এই সংক্রমণ হতে পারে। কোলন এমনিতেই খুব সংক্রমণপ্রবণ। কারণ, এর মধ্যে থাকে স্থুল। আর তাতে ভালো ও খারাপ দু'ধরনেরই ব্যাকটেরিয়াই প্রচুর পরিমাণে থাকে। প্রতি ১ বর্গ সেমি স্কুলে ১০১২ সংখ্যক ব্যাকটেরিয়া থাকে। স্কুলে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়াগুলি শরীরে পুষ্টি ও খনিজের জোগান দেয়। হজমে সাহায্য করে। খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলিই মূলত সংক্রমণ ও রোগভোগ ডেকে আনে। সাধারণ সময়ে স্কুলে থাকা খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলি কোলনের দেওয়াল বা রক্তে মিশে থাকে না। যখনই এগুলি কোলনের আবরণী পর্দা ও রক্তে মিশে যায়, তখনই কোলাইটিস হয়। এছাড়া ইউরিন ইনফেকশনের জন্য দায়ী ইসকেরেশিয়া কোলাই ব্যাকটিরিয়ার জন্যও অনেক সময় কোলাইটিস হয়। যে কোনও ভাইরাল ইনফেকশনের কারণে বা দীর্ঘদিন স্টেরয়েড খেলেও কোলাইটিসের ঝুঁকি বাড়ে।