ভালোবাসার ফুলছাপ
Sukhi Grihakon|December 2024
ধান কাটার পরিশ্রম শেষে সন্ধ্যায় ক্লান্ত সুবল পবনের চায়ের দোকানে ঢুকেছিল। দোকানটি ঘরের কাছে, বাঁশের মাচায় বসার ব্যবস্থা। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে তিনি শান্তিতে চুমুক দিচ্ছিলেন, এমন সময় বাইরে হারান আর নিমাইয়ের গলা শুনে তার কানে এল ললিতার নাম। তারা বলছিল, ইয়াকুব মিঞার সঙ্গে ললিতার নাকি বিয়ে হবে। ললিতার মতে, সে কাউকে ভয় পায় না, নিজের কাজ করবে। তবে হারান আর নিমাই মনে করছিলেন, ইয়াকুবের পরিবারের কাছে ললিতার জন্য ভালো কিছু হতে পারে। এসব কথা শুনতে শুনতে সুবলের মন মেঘলা হয়ে গেল, বিশেষত ললিতার সিদ্ধান্তের পর।
দীপান্বিতা রায়
ভালোবাসার ফুলছাপ

ধা ন কাটা চলছে। সারাদিন পরিশ্রম গেছে খুব। জমি | সুবলের বেশি নয়, মাত্রই পাঁচ বিঘে। কিন্তু মানুষও তো একটাই। একা হাতে সব করা। তাই সন্ধের মুখে হা ক্লান্ত হয়ে পবনের চায়ের দোকানে ঢুকেছিল সুবল। ঘরের লাগোয়া পবনের চায়ের দোকান। সামনের দিকে বাঁশের খুঁটির ওপর খড়ের ছাউনি। বাঁশের মাচা কেটেই বসার ব্যবস্থা। ছোটমতো একখানা বেঞ্চিও আছে। একধারে মাটির উনুন। কদিন ধরে ঠান্ডা পড়েছে খুব। ধানকাটার সময় ফুলহাতা শার্টখানা পরে নেয় সুবল। তার ওপর পুরনো আলোয়ানখানা জড়িয়েও জাড় কাটছে না। পবনকে চা বানাতে বলে তাই উনুনের ধার ঘেঁষে ভিতর দিকটায় বসেছে। উনুনের আঁচে ওম হচ্ছে বেশ। গরম চা ধরিয়ে দিয়ে পবন ভিতরে গেছে। দু'হাতের মধ্যে গেলাসটা ধরে আরামে চুমুক দিচ্ছিল সুবল, এমন সময় বাইরে গলার আওয়াজ পাওয়া গেল। দু’খান চা দাও গো মোড়লের পো... । বোসো টুকচান....আসছি আমি...।

ঘরের ভিতর থেকেই সাড়া দেয় পবন। গলার আওয়াজে সুবল বুঝতে পারে বাগদি পাড়ার হারান আর নিমাই। সুবলকে দেখতে পায়নি ওরা। কথা বলছে নিজেদের মধ্যে। ধান কেমন হয়েছে, আলু বোনা কবে থেকে হবে, এসব কথার মধ্যেই হঠাৎ ললিতার নামটা শুনে কান খাড়া হয়ে যায় সুবলের। গলাটা হারানের, ইয়াকুবের সঙ্গে ললিতার নাকি নিকা হবে শুনছি। নিমাইদা? কুথা থেকে শুনলি। আমি তো অমন কিছু শুনি নাই।

হুঁ গো। পাড়ার সবাই বলছে। সেদিন রহিমচাচার বাড়ি গেছিলাম, তখন শুনে এলাম। ইয়াকুবের তো বিবি আছে। মেয়ে দুটোও তো বড় হয়ে উঠল...। তা আছে। কিন্তু রহিমচাচা বলল, ললিতার কথাটাও তো ভাবতে হবে। একলা মেয়েমানুষ। ছোট একটা বাচ্চা। শ্যালকুকুরে তো ছিঁড়ে খাবে। ইয়াকুবের বাপই নাকি কথাটা তুলেছে। বাড়ির বউয়ের কথা তো তাদেরই ভাবতে হবে। কথাটা খুব ভুল নয় রে হারান। মেয়েটার তো বাপ-ভাই কেউ নাই। একলা থাকবে কী করে... রোজগারও নাই কুনও। গলাটা একটু নামিয়ে নেয় হারান, কিন্তু ললিতার তো নাকি মত নাই। বলেছে, আমি গেরামেরই মেয়ে, আমার ভয় কাকে। নিজে খেটে ছেলেকে মানুষ করব। কারও ঘরে ঝিগিরি করতে যেতে পারব না।

この記事は Sukhi Grihakon の December 2024 版に掲載されています。

7 日間の Magzter GOLD 無料トライアルを開始して、何千もの厳選されたプレミアム ストーリー、9,000 以上の雑誌や新聞にアクセスしてください。

この記事は Sukhi Grihakon の December 2024 版に掲載されています。

7 日間の Magzter GOLD 無料トライアルを開始して、何千もの厳選されたプレミアム ストーリー、9,000 以上の雑誌や新聞にアクセスしてください。

SUKHI GRIHAKONのその他の記事すべて表示
বন্যার আগে
Sukhi Grihakon

বন্যার আগে

একটা গল্প তৈরি হতে মনের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট স্থান লাগে। বিম্বা ঠিক এমন একটা মুহূর্ত খুঁজছিল। কিন্তু বাইরের বৃষ্টি যেন তার সমস্ত চিন্তাভাবনাকে ধূসর করে দিয়েছে। মাথার উপর বেগুনি রঙের ছাতা ধরে, বৃষ্টিতে ভেজা লম্বা পোশাক আর মাটির কাদা মাড়িয়ে বিম্বা এগিয়ে চলেছে। এই বৃষ্টিভেজা দিনগুলিতে তার গল্প লেখার অভ্যাস বেড়ে উঠেছে। যদিও কবিতা তার আসল ভালোবাসা—যা মনের গভীরে নিজে নিজে প্রস্ফুটিত হয়, গর্ভস্থ শিশুর মতো। বিম্বার পাশের কটেজে থাকা মালিনীও যেন এমন এক যাপনের সন্ধানে এসেছেন। একসময়ের কর্মব্যস্ত জীবন পেরিয়ে, সিনিয়র হোমের নির্জন একঘেয়েমি থেকে বেরিয়ে প্রকৃতির কোলে এসে নিজেকে খুঁজছেন। ঝম, বিম্বার সাত বছরের সন্তান, এক বৃষ্টি ভেজা সকালে তার সরল আর মজার কথায় মালিনীর মনের জমে থাকা ক্লান্তি মুছে দেয়। যেন দীর্ঘদিনের একাকিত্বের পর নতুন করে কোনও সম্পর্কের উষ্ণতায় সিক্ত হচ্ছেন মালিনী। বৃষ্টি, অরণ্য আর মানুষের গল্প যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। জীবন কোথাও থেমে থাকে না। সময়ের স্রোতে সবই একদিন গল্প হয়ে ওঠে।

time-read
9 分  |
December 2024
অপমান
Sukhi Grihakon

অপমান

এটি একটি অনুভূতির গভীরতা ও পরিবারের সম্পর্কের অস্থিরতা নিয়ে লেখা একটি গল্পের অংশ। বনলতা, একজন প্রবীণ মহিলা, তার শাশ্বতী ও অন্যান্য পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অনেক অপমান সহ্য করছেন। তার জীবন নানা অস্থিরতার মধ্যে বিভক্ত, এবং তিনি কখনওই নিজের জন্য কিছু ভাবেননি, সবসময় অন্যদের জন্য নিজেকে সামঞ্জস্য করেছেন। তবে, শাশ্বতীর কথায় আহত হয়ে তিনি এক ধরনের মানসিক দৃষ্টিকোণ থেকে নিজেকে পুনর্মূল্যায়ন করতে শুরু করেছেন, বিশেষত যখন তার আত্মবিশ্বাস এবং প্রাপ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। ইরাবতী, একজন সহানুভূতিশীল বন্ধুর মতো, বনলতাকে বুঝিয়ে দেন যে নিজের মতামত প্রতিষ্ঠা করা জরুরি, এবং তাকে নিজের শান্তি ও সম্মান পুনরুদ্ধারের জন্য দুর্গাপুরে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

time-read
10+ 分  |
December 2024
মিস এনসাইক্লোপিডিয়া
Sukhi Grihakon

মিস এনসাইক্লোপিডিয়া

পিঙ্কি চক্রবর্তী, তেইশ বছর বয়সী, মুম্বাইয়ের একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কাজ করছেন এবং বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বদের জীবনপঞ্জি প্রস্তুত করতে ভালোবাসেন। তার ফেসবুক পেজে প্রতিদিনই বিখ্যাত ও অখ্যাত ব্যক্তিদের তথ্য প্রকাশ করেন, যেগুলি অনেকের জন্য অজানা থাকে। তার এই কাজের ফলে, অনেকেই তার প্রশংসা করেছেন এবং তাকে ‘মিস এনসাইক্লোপিডিয়া’ বলে অভিহিত করেছেন। পিঙ্কি একজন প্রামাণিক তথ্য সংগ্রাহক, যিনি অনেক সাহিত্যিক ও শিল্পীর জীবনভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করছেন এবং সেগুলি জনগণের সামনে তুলে ধরছেন।

time-read
9 分  |
December 2024
সুন্দরের অন্তরমহল
Sukhi Grihakon

সুন্দরের অন্তরমহল

পালমশায়ের গলার আওয়াজ মিহি ও মৃদু, তিনি কথা বলেন আঙুল নাড়িয়ে নাড়িয়ে, যেন হাওয়ায় ছবি আঁকছেন। গলা শুকিয়ে আসায় চা খাওয়ার ইচ্ছে জানিয়ে তিনি গুপীর দোকানে যাওয়ার প্রস্তাব দেন, যেখানে চা, টোস্ট এবং অন্যান্য নাস্তাও পাওয়া যায়। তাঁর এলাকার ইতিহাসের গল্প শোনাতে শোনাতে তিনি জানালেন, তাঁদের পূর্বপুরুষরা বাংলাদেশের নাটোর থেকে এসে মৃৎশিল্প শুরু করেছিলেন এবং এখন তাঁদের তৈরি মূর্তি বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। পালমশায়ের মূর্তি তৈরির শৈলী গ্রিক বা রোমান শিল্পের প্রভাবের মতো, কিন্তু সেই সঙ্গে আছে বাঙালি নারীর সহজ সৌন্দর্য। তবে তাঁর স্ত্রী এ বিষয়ে একটু ভিন্ন মত পোষণ করেন, এবং মৃৎশিল্পের প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা তিক্ত।

time-read
10+ 分  |
December 2024
ভালোবাসার ফুলছাপ
Sukhi Grihakon

ভালোবাসার ফুলছাপ

ধান কাটার পরিশ্রম শেষে সন্ধ্যায় ক্লান্ত সুবল পবনের চায়ের দোকানে ঢুকেছিল। দোকানটি ঘরের কাছে, বাঁশের মাচায় বসার ব্যবস্থা। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে তিনি শান্তিতে চুমুক দিচ্ছিলেন, এমন সময় বাইরে হারান আর নিমাইয়ের গলা শুনে তার কানে এল ললিতার নাম। তারা বলছিল, ইয়াকুব মিঞার সঙ্গে ললিতার নাকি বিয়ে হবে। ললিতার মতে, সে কাউকে ভয় পায় না, নিজের কাজ করবে। তবে হারান আর নিমাই মনে করছিলেন, ইয়াকুবের পরিবারের কাছে ললিতার জন্য ভালো কিছু হতে পারে। এসব কথা শুনতে শুনতে সুবলের মন মেঘলা হয়ে গেল, বিশেষত ললিতার সিদ্ধান্তের পর।

time-read
10 分  |
December 2024
তিন রঙের ফুল
Sukhi Grihakon

তিন রঙের ফুল

শাসুজিত বসাক শ্বেতী হাতে ক্রেপ ব্যান্ডেজ বেঁধে দিতে দিতে বললেন, \"এখনও আগের মতোই ব্যথা আছে?\" সোমপ্রভা মুখ ঘুরিয়ে বললেন, \"এ শা, ব্যথা সহজে যাবে না। তাড়াতাড়ি করো...\" শাশ্বতী হাসলেন, \"কথায় কথায় এত রেগে যান কেন বলুন তো? রাগলে আপনার শরীর খারাপ হয়, বোঝেন না?\" সোমপ্রভা বললেন, \"হোক। তুমি মাথাব্যথা করো না।\" শাশ্বতী বুঝতে পারলেন, রাগ কমছে সোমপ্রভার। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাগও বেড়ে গেছে, তবে শাশ্বতী তা মেনে নিয়েছেন। শাশ্বতী জানতেন, রণজিৎ তাঁর মাকে অসম্ভব ভালোবাসতেন, কিন্তু শাশ্বতী কখনও কখনও বিরক্ত হতেন। রণজিৎ মারা যাওয়ার পর শাশ্বতী কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছিলেন, কিন্তু সোমপ্রভা তাঁর পাশে ছিলেন।

time-read
10+ 分  |
December 2024
গলি
Sukhi Grihakon

গলি

নীলিমা মিত্র, একজন মনোবিদ, হাতে ধরা দামি মোবাইল ফোনটি থেকে চোখ তুলে তাকালেন এক দম্পতির দিকে। স্বামী-স্ত্রীর অস্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখে, নীলিমা তাঁদের সমস্যা জানতে চাইলেন। মানসিক সমস্যা বা আবেগের জটিলতা সমাধান করতে তিনি কথা বলেন, তবে কখনও পেশাগত দৃষ্টিভঙ্গি হারান না। এই পরিস্থিতি তাঁর জন্য অস্বস্তিকর হলেও, তিনি তাঁর নিয়ম এবং পেশাদারিত্ব বজায় রেখে ক্লায়েন্টের সমস্যার মূলে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন।

time-read
10+ 分  |
December 2024
মহুল ভিজা রাত
Sukhi Grihakon

মহুল ভিজা রাত

মহুলতলায় দাঁড়িয়ে আছে কাজল। বাইকটা স্ট্যান্ড দেওয়া আছে রাস্তার পাশে। অপেক্ষা করছে সে তার ভালোবাসার মানুষটার জন্য।

time-read
7 分  |
December 2024
রুদ্রাণী রূপে মা সারদা
Sukhi Grihakon

রুদ্রাণী রূপে মা সারদা

একুশ শতকের নারী ভাবনার সঙ্গে উনিশ শতকের মা সারদার ভাবনার সাযুজ্য নিয়ে লিখছেন পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

time-read
6 分  |
December 2024
শিব ঠাকুরের আপন দেশে
Sukhi Grihakon

শিব ঠাকুরের আপন দেশে

গাঢ় নীল আকাশের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে শ্বেতশুভ্র হিমালয়। পর্বতের গহিন অন্দরে ঘুরে আসার অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিলেন কমলিনী চক্রবর্তী।

time-read
10 分  |
December 2024