বরফ-ঢাকা আউলি

যোশিমঠে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর সেখান থেকে কেবল কারে আউলি আর যাওয়া যায় না। গাড়ি-সোজা চলে যায় আউলি পর্যন্ত। তবে আট নম্বর খাম্বা থেকে চেয়ারলিফট চালু আছে। বরফ ঢাকা আউলি দেখার সেরা সময় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি

- লেখা ও ছবি: ভাস্কর দাস

আমরা দুই বরিষ্ঠ নাগরিক ২০২২-এর ৩১ জানুয়ারি কলকাতা থেকে বিমানে দিল্লি পৌঁছলাম। গন্তব্য আউলি। অগ্রিম গাড়ি বলাই ছিল। বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে সেই গাড়িতে সন্ধেয় এলাম হৃষীকেশ। হৃষীকেশে ঢোকার ঠিক আগে একটা ক্যাম্পে কোভিডের র‍্যাপিড টেস্ট করা হল। সেই রিপোর্ট খুব কাজে দিয়েছিল। পরে রাস্তায় পুলিশ অসংখ্য বার গাড়ি দাঁড় করিয়ে সেটা দেখেছে, নেগেটিভ দেখে ছেড়ে দিয়েছে।

ঠান্ডা বেশ ভালোই। হৃষীকেশে যে-হোটেলে উঠলাম, সেখানে আমরাই একমাত্র বাসিন্দা। এ যাত্রায় হৃষীকেশ দর্শন হল না। ভোরে উঠে লছমনঝুলায় গেলাম। প্রায় পঁচিশ বছরের পুরনো ছবিটার সঙ্গে মেলাতে গিয়ে বিশেষ তফাত পেলাম না। শুধু ওইটুকু রাস্তাতেই তিন-চারটে রিভার র‍্যাফটিং কোম্পানির দোকানঘর ছাড়া।

হৃষীকেশ থেকে সকাল সকাল বেরোলাম । কারণ দেড়শো কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে যার বেশ খানিকটা পাহাড়ি পথ এবং দুর্গম। কোনও কোনও জায়গায় রাস্তা বেশ খারাপ। দেবপ্রয়াগ, রুদ্রপ্রয়াগ, অগস্ত্যমুনি হয়ে এলাম মকুমঠ। মক্কুমঠ তুঙ্গনাথের শীতের আবাস। যে-হোটেলে আমাদের রাত্রিবাস, সেখানে ইগলুর মতো ঘর। অর্ধেক দেয়াল জুড়ে স্বচ্ছ কাচের দুই সারি জানলা। বাইরেটা দেখা যায়। নীচের সারিতে পর্দা আছে, উপরে নেই। বাইরে চূড়ান্ত ঠান্ডা। একপ্রস্থ কাচের কী ক্ষমতা ঠান্ডা আটকায়! বিছানা যেন জলঢালা। ঘরের ভিতরে হিটারের সামনে বসলাম চায়ের কাপ হাতে। আজ অমাবস্যা। বাইরে নিখাদ অন্ধকারের রাজত্ব।